রক্তনালি টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামনি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। হাত অনেক ফুলে গেছে। হাতের ফোলা অংশ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে আবারও। কথাও বলছে না। মুক্তমনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন সোমবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের অর্থো সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. হাফিজ উল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মুক্তামনির জেনারেল কন্ডিশন খুবই খারাপ। রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছে। তার হাতের যে টিউমার অপারেশন করা হয়েছিল, সেটা আবার বড় আকার ধারণ করেছে। টিউমারে দুই/তিনটি ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন ওর শরীরে অনেক জ্বর ছিল। সকাল থেকে খাওয়া-ধাওয়া করেনি। জ্বর সারাতে ওষুধ লেখে দিয়েছি। ওর যে অবস্থা সাতক্ষীরাতে সেই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না। সেজন্য ঢাকায় পাঠাতে পরামর্শ দিয়েছি।’
মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘সোমবার সকাল ১১টার পরে মুক্তামনির শরীরের তাপমাত্রা বেশি দেখে ডা. সামন্ত লাল সেন স্যাররে ফোন করি। তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের একজন কনসালটেন্ট ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারকে পাঠান মুক্তার শরীরের অবস্থা দেখতে। তারা মুক্তামনির জ্বরের জন্য ওষুধ লিখে দেন। সেটা খাওয়ানোর পর জ্বর কিছুটা কমেছে।’
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফরহাদ জামিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন স্যারের সঙ্গে কথা বলে আমরা মুক্তামনিকে দেখতে গিয়েছিলাম। মুক্তামনির অবস্থা সম্পর্কেও স্যারকে জানানো হয়েছে। ওর অবস্থা খুব একটা ভালো না। ডা. সামন্ত লাল সেন স্যার আমাকে বলেছেন, সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে। ঈদের পরে হয়তো তারা আবার ঢামেকে নিয়ে যাবেন।’
উল্লেখ্য, গত বছর ‘মুক্তামনির কী অসুখ জানেন না চিকিৎসকরাও!’ এই শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে একটি খবর প্রকাশিত হয়। পরে অন্যান্য সংবাদমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আসে। বিষয়টি নজরে আসার পর অনেকে মুক্তার চিকিৎসায় হাত বাড়ান। পরে মুক্তামনির চিকিৎসার সব ধরনের খরচের দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর গত বছরের ১২ জুলাই রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। প্রথমে তার রোগটিকে বিরল রোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরে বায়োপসি করে জানা যায়, তার রক্তনালীতে টিউমার হয়েছে। তখন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা। মুক্তামনির সব রিপোর্ট দেখে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ঢামেকের চিকিৎসকরাই তার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। এর পর মুক্তামনির হাতে ৫ আগস্ট প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। প্রথমে তার হাতের ফোলা অংশে অস্ত্রোপচার করে তা ফেলে দেন চিকিৎসকরা। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দুই দফায় তার হাতে লাগানো হয়। ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল মুক্তামনির স্কিন গ্রাফটিং (চামড়া লাগানো) অপারেশনে অংশ নেন। পরে মুক্তামনির হাত আবার ফুলে যাওয়ায়, ফোলা কমানোর জন্য হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর প্রায় পাঁচ মাস পর গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এক মাসের ছুটিতে বাবা-মার সঙ্গে মুক্তামনি নিজ বাড়িতে ফিরে।
পাঠক মন্তব্য
She has infection , She need to go to hospital. writing a prescription is not good enough. She is not getting proper treatment. It calls for action now, not in an hour but in minutes.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন