আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুক যুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে আরো চার মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে কুষ্টিয়ায় দুই জন, কুমিল্লা ও ফেনীতে একজন করে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ফেনী: ফেনী সদর উপজেলার দাউদপুল এলাকায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে মো. ফারুক (৩৫) নামে তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ফেনীস্থ র্যাব-৭ এর কোম্পানি অধিনায়ক সাফায়াত জামিল ফাহিম।
নিহত ফারুক চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার অলি আহমদের ছেলে।
র্যাব সূত্র জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে র্যাব ফেনী ক্যাম্পের একটি দল দাউদপুল এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ী মো. ফারুকের নেতৃত্বে একদল মাদক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম থেকে প্রাইভেটকারযোগে ঢাকা যাওয়ার পথে ফেনীর দাউদপুল এলাকায় পৌঁছালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি প্রাইভেটকার, ২২ হাজার পিস ইয়াবা, ১টি ওয়ান শুটারগান, ১০টি কার্তুজ ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফটিক ওরফে গাফফার (৩৮) ও লিটন হোসেন (৪০) নামের দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া এলাকা ও ভেড়ামারা উপজেলার হাওখালি মাঠের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক জানান, মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী লাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ‘বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় অন্য সব মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ফটিক ওরফে গাফফার। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। এসময় পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১ রাউন্ড গুলি ও ৭শ পিস ইয়াবা ও ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ফটিক ওরফে গাফফার কুমারখালী উপজলার এলেঙ্গীপাড়া গ্রামের মৃত ওসমান গনীর ছেলে।
ভেড়ামারা মডেল থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, ভেড়ামারা হাওয়াখালী ইট ভাটার কাছে একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক বেচাকেনা করছে এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশের টহল দল সেখানে অভিযান চালায়। তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় সবাই পালিয়ে গেলেও মাদক ব্যবসায়ী লিটন শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ২শ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে। নিহত লিটন শেখ উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখের ছেলে। এ সময় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। সে ভেড়ামারার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।
নিহত দুই জনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
কুমিল্লা: কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুল ইসলাম ইছা নামের এক তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কার চর ব্রিজ সংলগ্ন গোমতী বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ইছা একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৭টি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, পুলিশের বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার বিকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্য অনুসারে সহযোগীদের আটক এবং মাদক উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। তাকে নিয়ে রাতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমনের নেতৃত্বে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম শহরতলীর টিক্কারচর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নুরুল ইসলাম ইছার সহযোগী অপর মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ী ইছা গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধারের পর কুমেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন