বগুড়া অঞ্চলের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে কোথাও কোথাও জোড়াতালি ও ভরাট করা হলেও এবার ঈদ যাত্রায় কোনো অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
তবে যেসব স্থানে রাস্তা খারাপ আছে সেখানে নিজস্ব উপকরণ নিয়ে ভরাট এবং লেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু বর্ষা পুরোদমে শুরু হলে এসব গর্তে পানি জমে যাবে। ফলে ফের গর্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দেশে জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহন। মানুষের মহামূল্যবান জীবনকে গুরুত্ব দিয়ে সেভাবে গড়ে ওঠেনি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা। প্রয়োজনের তাগিদে জীবনহানির শঙ্কা নিয়ে চলাফেরা করছে মানুষ। উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ বগুড়ার মহাসড়কগুলো জোড়াতালি দিয়ে চললেও আঞ্চলিক অধিকাংশ সড়কের বেহাল অবস্থা। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে যানজট, দুর্ঘটনা আর জনদুর্ভোগ। অথচ এ সড়কগুলো দিয়ে প্রতিদিন প্রশাসনের অনেক কর্তাব্যক্তি যাতায়াত করলেও তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের নন্দীগ্রামের জামাদারপুকুর থেকে গাড়ীদহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গভীর খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া পৌরসভা এলাকার এবং জেলার অধিকাংশ আন্তঃজেলা সড়কগুলো খানাখন্দে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হওয়ায় পথচারী ও যানবাহন মালিক-শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এসব মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের দেখভাল করা অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা বলছেন, বরাদ্দ না পাওয়ায় এবং বর্ষার কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ-গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, নাটোর-বগুড়া, নওগাঁ-বগুড়া, বগুড়া-জয়পুরহাট, বগুড়া-শিবগঞ্জ, শহরের বানানী-মাটিডালি এবং বগুড়া-গাবতলীতে মোট ৫৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক আছে। এসব মহাসড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষ ও পণ্য পরিবহন করা হয়।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম পৌর শহরের ওমরপুর সবুজ চাল মিলের সামনে থেকে ডেরাহার তিনমাথা পর্যন্ত, নন্দীগ্রাম-শেরপুর সড়কের উপজেলার কৈগাড়ী থেকে দোহার পর্যন্ত, রানিরহাট থেকে টেংড়ামাগুড়, গোহাইলসড়কে কিছুটা খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।
বগুড়া থেকে আন্তঃজেলার বাসচালক আনিছুর রহমান ও মনির হোসেন জানান, রাস্তায় খানাখন্দ থাকায় গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মালবাহী ট্রাক রাস্তার বড় বড় গর্তে আটকে পড়ার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
বগুড়ার বাসচালক আমিরুল ইসলাম ও আজাহার আলী জানান, সারাদেশের রাস্তার উন্নতি হলেও এর কোনো প্রভাব পড়েনি বগুড়া জেলার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে। সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মহাসড়কের অনেক স্থানে গর্ত হয়ে গেছে। গত ঈদযাত্রার কারণে কিছু গর্ত পূরণ করলেও বৃষ্টিতে আবারো গর্তের সৃষ্টি হবে। আবার কিছু স্থান ইট বিছানো রয়েছে। এসব রাস্তায় স্থায়ী মেরামত কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ট্রাকচালক আমজাদ হোসেন ও খলিলুর রহমান জানান, ঢাকা-বগুড়া ও বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের সাথে এই সড়কটির সংযোগ থাকায় প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করে। সড়ক নির্মাণকাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করার কারণেই কার্পেটিংয়ের ৩-৪ মাসের মাথায় এই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে এক দিকে যেমন দেশের রাজস্ব খাতের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে অপরদিকে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান জানান, জেলায় ৫৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক আছে। এর মধ্যে কিছু স্থানে সামান্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলোতে আমাদের নিজস্ব উপকরণ দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। আর কিছু রাস্তায় লেয়ার করা হচ্ছে। এসব মেরামত কাজ চলমান থাকবে। আসন্ন ঈদ যাত্রায় কোনো অসুবিধা হবে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন