মাজেদুল ইসলাম। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙা এলাকার এই কিশোর স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু অর্থের অভাবে তার পড়াশোনা এখন বন্ধের পথে। ছেলের পড়ার খরচ দিতে না পেরে গার্মেন্টসে গিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন তার বাবা।
হাতীবান্ধা এস এস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাজেদুল ইসলাম এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পেয়েছে। তার বাবা মহসীন আলী মিনি বাসে চালকের সহকারীর কাজ করেন। এ কাজ করে সাত সদস্যের সংসারে তিন বেলা খাওয়া-পরা নিয়েই কষ্টে থাকতে হয় তাকে। তাই সন্তানদের পড়াশোনার অর্থ যোগাতে পারছেন না তিনি।
মাজেদুল ইসলামকে তার বাবা বলেছেন, ‘তোর আর ডাক্তার হওয়া নাগবে না, তুই ঢাকা যায়া গার্মেন্টসত কাজ কর।’
ছেলের পড়াশোনার বিষয়ে মহসীন আলী আমাদের সময়কে বলেন, ‘ক্যামন করি মোর ব্যাটার (ছেলে) ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করিম (করব)। হেলপারি করি যা আয় করি, তা দিয়ে সাতজনের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্চি। তাই ব্যাটাকে ঢাকা যাইতে কইছি।’
মাজেদুল ইসলাম জানায়, তার স্বপ্ন ডাক্তারি পড়ার। তাই অনেক কষ্টের মাঝেও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছে। পরীক্ষায় তার ফলও জুটেছে। সে প্রায় সময় দিনমজুরের কাজ করে নিজের পড়াশোনার খরচ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু এসএসসি পাসের পর এখন কিভাবে পড়ার টাকা পাবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে।
মাজেদুল ইসলামের ভাষ্যমতে, ‘বাবার যা আয় তা দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে। আমার লেখাপড়ার খরচ চলবে কিভাবে? এখন বুঝলাম, আমাদের মতো গরিবদের স্বপ্ন দেখতে নাই। শেষ পর্যন্ত ঢাকা গিয়ে গার্মেন্টসেই কাজ করতে হবে আমাকে।’
হাতীবান্ধা এস এস সরকাসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম প্রধান জানান, মাজেদুল অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে সে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন