সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাজেট ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এসেছে প্রবাসীদের রেমিটেন্সে ভ্যাট বা কর দেয়ার প্রসঙ্গে।
অনেকেই প্রবাসীদের রেমিটেন্সে ভ্যাট বা কর বসানোতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই নিয়ে ইউটিউবে অর্থমন্ত্রীর ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে প্রবাসীদের রেমিটেন্সে ভ্যাট আরপের বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন।
তিনি বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্সের উপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আরোপিত হয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। দেশের বৈধ রেমিটেন্স প্রবাহ বন্ধ করে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর অপপ্রয়াস হিসাবে এই প্রচারণা চালানো হতে পারে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মনে করে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর আরোপিত হয় পণ্য বা সেবা সরবরাহের ওপর। বাংলাদেশের প্রবাসীরা দেশের বাইরে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে যে সেবা দিয়ে থাকেন তার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আসে।
এ সম্পূর্ণ কার্যক্রম মূল্য সংযোজন কর আইন- ১৯৯১ এর ধারা ৩ এর উপধারা ২(ক) মোতাবেক সেবা রফতানি হিসাবে বিবেচিত।
সুতরাং এ রফতানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত। অর্থাৎ রেমিটেন্স সীমা নির্বিশেষে এ খাতের ওপর কোনও ভ্যাট প্রযোজ্য নয়।
তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যে কোনও পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিটেন্স পাঠাতে পারেন। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ চ্যানেল বা হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিটেন্স পাঠাতে হলে তা জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে না।
তাই হুন্ডির মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানো থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হুন্ডি বা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের বিষয়ে সবসময় সতর্ক রয়েছে।
সৈয়দ এ মুমেন বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ভ্যাট বা কর বসানোর বিষয়টি গুজব।
এ কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্টেটমেন্ট হলো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপপ্রচারে কোনও বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না।
এদিকে বুধবার সকালে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রবাসীদের রেমিটেন্সে ভ্যাট বিষয়টি গুজব বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, প্রবাসী ভাইয়েরা গুজবে কান দেবেন না। এই বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর কোন ভ্যাট বা ট্যাক্স আরোপ করা হয়নি।
এরকম কোন আলোচনাও কোথাও হয়নি। পরিকল্পিত ভাবে বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এটা অবৈধ পথে যারা প্রবাসীদের আয় পাঠানোর ব্যবসা করেন তাদের কাজ হতে পারে, আর সেই সাথে সরকার বিরোধীরা তো রয়েছেই।
শাহরিয়ার আলম শেষে লিখেছেন, দয়া করে প্রবাসীদের মাঝে এই বার্তাটা ছড়িয়ে দিবেন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরীফুল হাসান এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, গত কয়েকিদন ধরে বহুজন জিজ্ঞাসা করছেন প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর কেন সরকার ভ্যাট বা ট্যাক্স বসাচ্ছে?
আমি জানি না এমন তথ্য কোথায় কে পেল? প্রবাসী ভাইয়েরা গুজবে কান দেবেন না। এই বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর কোন ভ্যাট বা ট্যাক্স আরোপ করা হয়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন