আগামী অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর সরকার কর আরোপ করতে যাচ্ছে, এমন খবরে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। কতটা কষ্ট করে প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন, বিদেশে কীভাবে পদে পদে হয়রানি হতে হচ্ছে তাদের, ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তিগত প্রোফাইলে কয়েকদিন ধরে এ সম্পর্কিত পোস্ট দেখা যাচ্ছে। কিন্তু যে সংবাদের ওপর ভিত্তি করে প্রবাসীরা এভাবে ক্ষোভ জানাচ্ছেন, সেটি সঠিক নয়।
বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে ১৩ জুন বুধবার এক বিবৃতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসবকে গুজব ও মিথ্যা তথ্য বলে উড়িয়ে দিয়েছে। প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে সরকার কোনো ট্যাক্স বসায়নি বলে নিশ্চিত করেছে এনবিআর। একই তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও। তিনি প্রবাসীদের উদ্বিগ্ন না হওয়ারও আহবান জানিয়েছেন।
গত ৭ জুন ২০১৮-’১৯ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এরপর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে গুজব ওঠে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ওপর সরকার ভ্যাট বসিয়েছে। এরপর থেকেই ক্ষোভ জানাতে থাকেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। রেমিট্যান্সের ওপর ভ্যাট বসালে রেমিটেন্স প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হবে বলেও আশঙ্কা করছিলেন অনেকে। সাত দিন ধরে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার প্রেক্ষিতে এনবিআর বৃহস্পতিবার ওই বিবৃতি দেয়।
এনবিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়, ভ্যাট আরোপ হয় পণ্য ও সেবা সরবরাহের ওপর। প্রবাসীরা দেশের বাইরে কঠোর শ্রমের বিনিময়ে যে সেবা দিয়ে থাকেন, এর বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। এই কার্যক্রম ১৯৯১ সালের মূল্য সংযোজন কর আইনের ৩ নম্বর ধারার ২ (ক) নম্বর উপধারা অনুযায়ী, সেবা রপ্তানি হিসেবে বিবেচিত। তাই এই রপ্তানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত। অর্থাৎ রেমিট্যান্স যা-ই আসুক না কেন, এই খাতের ওপর ভ্যাট বসবে না। তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যেকোনো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স ও প্রেরণ করতে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) সময়ে ১ হাজার ৩৫৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা।
প্রিয়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন