দিন যত যাচ্ছে তার সাথে সাথে এগিয়ে আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের এ বছরের প্রথম থেকেই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা। যে যেভাবে পারছে ভোটের বছরে নিজেদের ব্যালট বাক্স ভাড়ি করার কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে চলে এসেছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর। আর এই ঈদকে ঘিরে রাজনীতিবিদদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাও এখন বেশ জোড়ালোভাবেই চলছে। ভোটারদের মনে ঠাই নেওয়ার জন্য তাদের পাশে থেকে ঈদ উদযাপনের জন্য আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ েনেতাই তাদের স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকার গন্তব্যে ঢাকা ছাড়ছেন। তবে কেউ কেউ কারণবশত ঢাকাতে ঈদ করলেও। তারা ঈদের আগে ও পরে নির্বাচনী এলাকায় থাকছেন।
জানা গেছে, ঈদের দিন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বের মতো ই তার সরকারি বাসভবন গণভবনে থাকছেন। সেদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে তিনি কুশল বিনিময় করবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ঈদ করবেন। কোম্পানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করবেন তিনি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ঈদ করবেন তার নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠিতে। ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ যাবত তিনি তার এলাকায় ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে এসেছেন।
উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদও ঈদ করবেন তার নির্বাচনী এলাকা ভোলায়। তিনিও ছুটির দিনগুলোতে এলাকায় গিয়ে ঈদ সামগ্রী বিতরণ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে এসেছেন।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান ঈদ করবেন ঢাকায় তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। তিনি ইতোমধ্যে তার নির্বাচনী এলাকায় যাকাতের কাপড় বিতরণ করে এসেছেন।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ ঈদ করবেন তার নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরে। ইতোমধ্যে গত ১০ দিন তিনি এলাকায় অবস্থান করছেন। ঈদ করে ঢাকায় ফিরবেন।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঈদ করবেন ঢাকায়। তিনিও ঈদের আগেই এলাকায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করে এসেছেন। আবার ঈদের পরে যাবেন।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ইতোমধ্যে কানাডা অবস্থান করছেন। আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকায় ঈদ করবেন। তার নির্বাচনী এলাকা মোহাম্মদপুরে তিনি ঈদের দিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন।
যুগ্ম-সম্পাদক ডা. দীপু মনি পবিত্র ওমরা পালন করতে সৌদি আরব গেছেন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকা চাঁদপুরে ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।
আরেক যুগ্ম-সম্পাদক আবদুর রহমানও তার নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরে ঈদ করবেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন তার গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবেন। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে ঈদ করবেন। সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঈদ করবেন ঢাকায়। তিনি ইতোমধ্যে তার নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এসেছেন। ঈদের পর গিয়ে ফের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অধিকাংশই তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় এবারের ঈদে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না দেশের বৃহৎ এ রাজনৈতিক দলটিতে। এবার দলের শীর্ষ নেতারা অনেকটা নীরবেই কাটাবেন ঈদ উৎসব। তারপরও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সুযোগ-সুবিধামতো নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী বলেন, চেয়ারপারসন জেলে থাকায় এবার কেন্দ্রীয়ভাবে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন না বিএনপি নেতারা। তবে শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ঢাকায় ঈদ করবেন। আবার সুযোগমতো এলাকায়ও যাবেন। আবার নির্বাচন করতে আগ্রহী নেতাদের অনেকেই নিজ এলাকায় গিয়ে ঈদের সময় কাটাবেন। এ সময় তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হবেন। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে অঘোষিতভাবে নির্দেশনা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন