শহীদ বুদ্ধিজীবী সেলিনা পারভীনের ছেলে সুমন জাহিদকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার বড় ভায়েরা এটিএম এমদাদুল হক বুলবুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কে বা কারা তাকে উত্তর শাজাহানপুরের বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপরই রেললাইনের পাশে তার লাশ পাওয়ার খবর শোনা যায়। সুতরাং তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
এটিএম এমদাদুল হক বুলবুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসে চলে যাই। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার দিকে সুমন জাহিদের স্ত্রী টুইসির ফোন পেয়ে দ্রুত ছুটে যাই তাদের বাসায়। তার পরিবারের কাছ থেকে যতটুকু শুনেছি, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইরে।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক চৌধুরী মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সাক্ষী ছিলেন সুমন জাহিদ। পরিবারের পক্ষ থেকে বড় ভায়েরার দাবি, ‘তাকে এর আগেও বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। দুই বছর ধরে তিনি অনেকবার হুমকি পেয়েছেন। তাই আমরা ধারণা করছি, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
যদিও পুলিশের ধারণা, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সুমন জাহিদের। কারণ বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) সকালে খিলগাঁওয়ের বাগিচা মসজিদ সংলগ্ন রেললাইন ঘেঁষে তার লাশ পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থল থেকে সুমন জাহিদের মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সুমন জাহিদের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।’
ময়নাতদন্তের জন্য সুমন জাহিদের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। লাশ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে যান রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। রেললাইন ঘেঁষেই সুমন জাহিদের লাশ পড়ে ছিল। আমরা ধারণা করছি, ট্রেনের চাকা তার গলার ওপর দিয়ে গেছে। তবে কোন ট্রেন তা আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।’
মৃতের শ্যালক সারোয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সুমন জাহিদ ফারমার্স ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার সেকেন্ড অফিসার ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ফেনী।
সুমন জাহিদের দুই সন্তান। তাদের মধ্যে স্মরণ টিঅ্যান্ডটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আরেক ছেলে সুমন্দ্র আইডিয়াল স্কুলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন