নির্মাণের প্রায় ৮০ বছর পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সচিবালয় ভবনে বড় ধরনের সংষ্কারকাজ শুরু হয়েছে। সচিবালয়ের বর্তমান ভবন ১৯৩৯ সালে নির্মিত হয়। বছরজুড়ে কর্মব্যস্ত থাকে দেশের প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সচিবালয়। একটানা দু’দিনের বেশি কখনো ছুটি মেলে না সচিবালয়ের। ফলে বড় কোনো সংস্কারকাজ এখনঅব্দি হয়ে ওঠেনি।
সচিবালয়ের ভেতরে চাহিদার তুলনায় জায়গা কম হওয়ায় সংষ্কারকাজ করতে গেলেও নানা বিড়ম্বনা দেখা দেয়। এবার রোজা ২৯টি হলে ঈদুল ফিতর শনিবার। ঈদের পরে রোববার পর্যন্ত সচিবালয় বন্ধ থাকবে। সোমবার থেকে যথারীতি চলবে অফিস।
সচিবালয় খুললেও কর্মকর্তাদের পদভারে উমুখরিত আরও দু’তিন দিন লেগে যায়। এই সুযোগে সচিবালয়ের অধিকাংশ ভবনের মেরামতের কাজে হাত দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
গণপূর্তমন্ত্রীর একান্ত সচিব ফয়েজ আহাম্মদ পরিবর্তন ডটকমকে জানান, ১৯৩৯ সালে সচিবালয়ের ভবনগুলো নির্মিত। আগে সচিবালয়ে সেভাবে বড় কোনো সংস্কারকাজ করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। টয়লেটগুলোর অবস্থাও নাজুক। সবদিক বিবেচনায় এবার ঈদের আগে সংস্কার শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে ঈদের পরেও যতদিন লাগে কাজ করা হবে।
শবে কদরের কারণে বলা চলে বুধবার থেকেই সচিবালয়ে ঈদ ছুটির আমেজ পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করে অনেকেই পাড়ি জমিয়েছেন গ্রামের বাড়ি। এরই সুযোগ নিয়ে গেল সপ্তাহ থেকে মেরামত কাজ পুরোদমে করছে।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘এবার ভালোভাবেই সংস্কার করা হবে। সচিবালয়কে বাইরে থেকে একটি দেশের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মতো দেখায় না। এজন্য একটু সময় নিয়ে দেখে-শুনে সংস্কার করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র ঈদের ছুটির সময় নয়, শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংস্কারকাজ করা হবে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে ঈদের ছুটির মধ্যে কাজ শেষ করার।’
কি ধরনের সংস্কার করা হচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শুধুমাত্র বাহ্যিক রঙের কাজ নয়, যেসব ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে এবং টয়লেট নষ্ট হয়ে গেছে, সেগুলো সংস্কার করা হচ্ছে।’
এদিকে, ঈদের আগে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস। এদিন অধিকাংশ দফতরে সেভাবে দাফতরিক কার্যক্রম দেখা যায়নি। অনেকে সকালে এসে হাজিরা দিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে গেছেন। বুধবার শবে কদরের গেজেটেড ছুটি থাকায় অনেকে মঙ্গলবারই অফিস করে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমরা সারা বছর তাদের নিয়ে কাজ করি। ফলে কিছু আবদার আইনের জালে না আটকে ছাড় দেয়া হয়। অনেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি যান, মানবিক দিক বিবেচনায় একটু ছাড় দেয়া হয়েছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন