খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কিছু কেন্দ্রে গোলযোগ হলেও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তেমনটা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। সুষ্ঠু ভোটে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
ভোটের ছয় দিন আগে বুধবার গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে এক সমন্বয় সভায় যোগ দেন সিইসি। খুলনার মতো গাজীপুরেও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে আমি সন্তুষ্ট।’
গত ১৫ মে খুলনার পাশাপাশি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিটের কারণে ভোট পিছিয়ে ২৬ জুন নির্ধারিত হয়েছে।
খুলনায় ভোট শান্তিপূর্ণ হলেও বেশ কিছু কেন্দ্রে সিল মারার ঘটনা ঘটে। আর নির্বাচন কমিশন তিনটি কেন্দ্র পুরোপুরি এবং আরও অন্তত চারটি কেন্দ্রে আংশিক ভোট বন্ধ রাখে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার জোট ইলেকশন ওয়াকির্ং গ্রুপ জানিয়েছে ‘সামান্য’ গোলযোগ ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়ার মতো না। তবে বিএনপি অভিযোগ করেছে, তারা হেরেছে কারচুপির কারণে। আর গাজীপুরে কারচুপি হলে পরিণতি ভালো হবে না বলেও নেতারা সতর্ক করছেন।
সিইসি বলেন, ‘খুলনায় প্রতিটি কেন্দ্রে এত প্রস্তুতি থাকার পরও কেন ভোট স্টাপিং হলো সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এবার গাজীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য যারা সভায় ছিলেন তারা কথা দিয়েছেন যে গাজীপুরে সেটা হবে না।’
এক প্রশ্নে গাজীপুরের সিইসি বলেন, তফসিলের পর ৮০দিন পার হয়ে গেলেও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি যেটা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারে। সুতরাং নির্বাচনী পরিবেশ ভালো আছে, গাজীপুরে নির্বাচন নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেই।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। তাদের বরাত দিয়ে নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এ প্রত্যাশা করেছে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। গাজীপুরের প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য। আর এ রকম অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা।’
আলোচনার বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কীভাবে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব কী হবে এবং প্রশাসনের কী ভূমিকা থাকবে তার পরিকল্পনা কী থাকবে তা নিয়ে আলাপ আলোচনা ও মতবিনিময় হয়েছে। আমরা আশা করি ২৬ জুন যে নির্বাচন হবে সেটা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। ভোটাররা তাদের পছন্দ মতো প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে পারবেন।’
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকারের অভিযোগে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না-এই প্রশ্ন ছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কোথায় আচরণ বিধি ভঙ্গ হচ্ছে সেটাতো বলতে হবে। আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়টি সুস্পষ্ট বললে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলব।’
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সঞ্চালনায় এতে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন