বাংলাদেশে যে নতুন মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরি করা হচ্ছে, তার লক্ষ্য হবে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকারী গডফাদার ও মাদক সিন্ডিকেট। এদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রস্তাবিত এই নতুন আইনের পটভূমি ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিবিসিকে জানান, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করতে এই লড়াই ছাড়া কোনো পথ নেই।
প্রস্তাবিত আইনটির ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী জানান, বর্তমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০-এর ১৯ ধারা অনুযায়ী, মাদক অপরাধীর শাস্তি নির্ভর করে তার কাছে কী পরিমাণ মাদক পাওয়া গেছে তার ওপর।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির কাছে মাদকদ্রব্য না পাওয়া গেলে, সে আইনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। যারা ব্যবসাটা নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ খুব একটা থাকে না।’
এই বিষয়টাকে মাথায় রেখেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। কিন্তু এই আইন কবে চূড়ান্ত করা হবে সে সম্পর্কে আনিসুল হক জানান, আইনের খসড়াটি তৈরি করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা সেটি যাচাইয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেই তখন এর মেয়াদ সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
এই বিষয়ে বুধবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৮ মে থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৩৩৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া মোট ২০ হাজার ৭৬৭ ব্যক্তিকে আটক করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।’
ওদিকে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো মাদকবিরোধী অভিযানের সময় বন্দুকযুদ্ধের নামে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ প্রতিবাদ জানিয়েছে। মাদক বিস্তারের দায় এড়াতে ও মাদকের মূল উৎসকে আড়াল করার লক্ষ্যেই সরকার এভাবে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করছে। কথিত বন্দুকযুদ্ধের প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি করছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
প্রিয়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন