ভারত এবং তাদের প্রতিবেশী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাতাসে এমন কিছু আছে, যা অন্যসব অঞ্চল থেকে ভিন্ন। ভারতীয় উপমহাদেশের বাতাসে রয়েছে ফরমালডিহাইড- একটি বর্ণহীন গ্যাস। মূলত সবুজ গাছপালাই এর উৎস। কিন্তু নানা ধরণের দূষণ থেকেও তৈরি হতে পারে ফরমালডিহাইড।
ভারত এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর বাতাসে যে ফরমালডিহাইডের পরিমাণ অনেক বেশি সেটি ধরা পড়েছে ইউরোপের একটি স্যাটেলাইটে। গত অক্টোবরে সেন্টিনেল-ফাইভ-পি স্যাটেলাইট আকাশে পাঠানো হয় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বায়ুদূষণ পরিমাপের জন্য। খবর বিবিসির
এটিতে ট্রপোমি বলে একটি যন্ত্র আছে যেটি বায়ুমন্ডলে আরও অনেক কিছুর সঙ্গে ফরমালডিহাইডের উপস্থিতি সনাক্ত করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাতাসে যে ফরমালডিহাইড পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগের উৎস প্রকৃতি। কিন্তু দূষণ এবং আগুন থেকেও ফরমালডিহাইড তৈরি হয়।
ভারতের বায়ুতে যে ফরমালডিহাইড অনেক বেশি এর কারণ সেখানে ভারতের কৃষিতে এবং পল্লী অঞ্চলে আগুনের ব্যবহার অনেক বেশি। বাড়িতে রান্নার কাজে এবং ঘর গরম করতে প্রচুর কাঠ পোড়ানো হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরণের অর্গ্যানিক কমপাউন্ড যখন নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, সূর্যের আলো ইত্যাদির সঙ্গে বিক্রিয়া করছে, তখন সেটি ভুপৃষ্ঠে ওজোন তৈরি করে। আর এটি মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খুবই বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এ থেকে তৈরি হতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা।
তবে ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ফরমালডিহাইডের উপস্থিতি অনেক কম। কারণ রাজস্থানের মতো মরুভূমিতে সবুজ প্রকৃতি একেবারেই নেই, সেখানে কৃষিকাজও খুবই কম।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাদের কাছে এখন বিশ্বের বায়ু দূষণ সম্পর্কে অনেক বেশি ভালো তথ্য আছে। তবে তাদের আরও অনেক বেশি পর্যবেক্ষণ দরকার। বহু বছর ধরে এই পর্যবেক্ষণ চালাতে হবে।
বেলজিয়ামের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব স্পেস এরোনোমি’র বিজ্ঞানী ইসাবেল ডে স্মেডট বলেন, এখন তারা এই বায়ু দূষণের অনেক বেশি বিস্তারিত তথ্য পাচ্ছেন। যেটা আগে সম্ভব ছিল না। কিন্তু এই তথ্য অনেক দীর্ঘ সময় ধরে সংগ্রহ করতে হবে যাতে বিস্তারিত একটা ছবি পাওয়া যায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন