উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে আকাশ জয় করে স্যাটেলাইট ক্লাবে নাম লিখিয়েছে এ দেশ। দেশের সবখানেই ডিজিটালের ছোঁয়া। অথচ এখনো দেশের ভবিষ্যৎ কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে বাঁশের সাঁকো ঝুলে। দেখে যেন মনে হয় সাঁকোতে ঝুলছে বাংলাদেশ।
দুই বছর আগে পাকা সেতু ভেঙে পড়ায় সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শহীদ শাহজাহান কবির উচ্চ (আরপিএন) বিদ্যালয় ও রেহাইপুখুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোতে ঝুলে ঝুলে স্কুলে যাতায়াত করছে।
এছাড়া এই সাঁকো দিয়ে অন্তত পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে উপজেলা সদর ও স্থানীয় হাটবাজারে যাতায়াতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এই সাঁকো পাড় হতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর হাত-পা ভেঙে আহত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ২০১৬ সালের বন্যায় রেহাইপুখুরিয়া খালের পাকা সেতুটি পানির স্রোতের তোড়ে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে শুষ্ক মৌসুমে গভীর খাল ও বর্ষায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে খালের পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত আরপিএন উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া খাতুন ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রেজাউল করিম জানায়, বর্ষা মৌসুমে স্কুলে যাতায়াতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে অনেক সময় পা পিছলে নিচে পড়ে হাত-পা ভেঙে যায়। এ কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
রেহাইপুখুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানায়, মাঝেমধ্যে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটলেও বর্ষা মৌসুমে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এমনকি প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করছে। তাই সমস্যা সমাধানে দ্রুত একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাহহার সিদ্দিকী জানান, এই সেতুর ওপর দিয়েই রেহাইপুখুরিয়া উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বপাড়া, বিনানই, চরছলিমাবাদ, বনগ্রাম, মিটুয়ানী এলাকার লোকজন যাতায়াত করে। এছাড়া সেতুটি ভেঙে পড়ায় সব প্রকার যানবাহন বন্ধ থাকায় এলাকাবাসীকে শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। তাদের জীবনমানের উন্নয়নের প্রধান বাধা হচ্ছে রেহাইপুখুরিয়া খাল।
তিনি বলেন, আপাতত যাতায়াতের জন্য স্থানীয় এমপির সহায়তায় চারটি স্থানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে বর্ষা শেষে কাজ শুরু করা হবে।
চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমান জানান, দুটি বিদ্যালয় ও একটি বাজারে যাতায়াতের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি নির্মাণে টেন্ডার হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু ও শেষ হয়ে গেলে জনদুর্ভোগ কমে যাবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন