নারায়ণগঞ্জে নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীরের বন্ধু নিখোঁজ স্বপনকেও হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যাকারী প্রবীবের খুনি পিন্টু দেবনাথ।
স্বপন কুমার সাহা ওরফে সাইদুর রহমান স্বপন প্রায় ২১ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। স্বপনের প্রতিও খুনি পিন্টুর চরম ক্ষোভ ছিল। পিন্টুর প্রেমিকা গ্রেফতারকৃত রত্নার জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এ তথ্য।
জানা যায়, নিখোঁজ স্বপন হোসিয়ারি ব্যবসার পাশাপাশি পাসপোর্টের ব্রোকারি করতেন। ফতুল্লার কাশীপুর এলাকার সেলিনা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে তার প্রেম ছিল। পরে স্বপন কুমার সাহা থেকে সাইদুর রহমান স্বপন নামে মুসলমান হয়ে তিনি সেলিনাকে বিয়ে করেন।
স্বপন নিখোঁজ হলে ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর তার বড় ভাই অজিত কুমার সাহা নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর স্বপনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার ৬ নভেম্বর ফতুল্লা থানায় অপর একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। প্রায় ২১ মাস আগে করা সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে আটক হয় নিহত প্রবীরের ঘাতক পিন্টুর প্রেমিকা রত্না রানী চক্রবর্তী। রত্না শহরের মাসদাইর এলাকায় বসবাস করলেও তার স্থায়ী বাড়ি কিশোরগঞ্জে। ১৮ জুন প্রবীরকে টুকরো টুকরো করে হত্যার পর পিন্টু ভোররাত অবধি রত্নার সঙ্গে ফোনালাপে ব্যস্ত ছিল।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রত্না স্বপন নিখোঁজ হওয়ারও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। সে জানিয়েছে, পিন্টুর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। বন্ধকি ব্যবসার খাতিরে পিন্টুকে নগদ ৭ লাখ টাকাও দিয়েছিল রত্না।
প্রতি মাসে ওই টাকার সুদ এনে দিত পিন্টু। রত্না আরও জানায়, নিহত প্রবীর, তার বন্ধু স্বপন, গোপী, উত্তমের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল পিন্টু। প্রায় ২০ মাস আগে পিন্টু একদিন রাতে রত্নার বাসায় আসে এবং দুটি মোবাইল দিয়ে জানায়, মোবাইলগুলো স্বপনের।
পিন্টু মোবাইলগুলো ফেলে দিতে বললেও না ফেলে কয়েক মাস পর সে ব্যবহার করা শুরু করে। পিন্টু একদিন মাতাল অবস্থায় তাকে (রত্না) জানায়, স্বপনকে নিজের ফ্ল্যাটে টুকরো টুকরো করে হত্যা করে তার লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। গোপীকেও হত্যার পরিকল্পনা ছিল পিন্টুর।
সোমবার স্বপনের বড় ভাই অজিত কুমার সাহা নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় পিন্টু দেবনাথকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ওই মামলায় পিন্টুর প্রেমিকা রত্না রানী চক্রবর্তী ও মামুন মোল্লা নামে দু’জনে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে তাদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন