ভিডিও>>‘গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ’ প্রবাল প্রাচীরের ৯৩ শতাংশই ধ্বংসের পথে
21 Apr, 2017
বাংলাদেশের সুন্দরবন সংলগ্ন ‘রামপাল বিদ্যুকেন্দ্রের’ মতোই অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের আদানি গ্রুপের একটি ‘কয়লাখনি প্রকল্প’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার শুরু হয়েছে।
কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের কাছে অবস্থিত প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলারের ওই ‘কারমাইকেল কয়লা খনি’ প্রকল্পে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে ভারতীয় গ্রুপ কোম্পানিটি।
তবে দেশটির পরিবেশবাদী ও বিজ্ঞানীরা বিষয়টিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। তারা বলছেন, কয়লা প্রকল্পের কারণে প্রবাল প্রাচীরের প্রায় ৯৩ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই প্রকল্পটি বাতিলের দাবি তুলেছেন তারা। দেশটির ৯০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা-আদানি গ্রুপের কাছে চিঠিও দিয়েছেন।
গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ২ হাজার কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে বিস্তৃৃত বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল প্রাচীর। ৬শ’ প্রজাতির কোরাল, আর অন্তত ১৫শ’ জাতের মাছের এ অভয়ারণ্য বিশ্ব ঐতিহ্যেরও অংশ।
সুন্দরবনের অদূরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত প্রকল্পের মত সেখানে কয়লাখনি প্রকল্প গড়ে তুলেছে ভারতেরই এক শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী, আদানি। যা নিয়েও শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক।
উভয় ক্ষেত্রেই সম্ভাব্য পরিবেশ দূষণের উৎস, কয়লা। পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা রামপালে কাঁচামাল হিসেবে আনা কয়লা ও প্রকল্পের ছাই সুন্দরবনের জীববৈচিত্র ধ্বংস করবে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে এরইমধ্যে ক্ষতির মুখে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ১৫শ’ কিলোমিটার এলাকা।
এরইমধ্যে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ রক্ষার আন্দোলনে বিজ্ঞানী ছাড়াও পরিবেশ কর্মী আর খেলোয়াড়রাও যোগ দিয়েছেন। কয়লা খনি প্রকল্পের কাজ বন্ধের আহবান জানিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপকে খোলা চিঠি দিয়েছেন, বিখ্যাত ক্রিকেট তারকা দুই ভাই ইয়ান ও গ্রেগ চ্যাপেলসহ ৯০ ব্যাক্তি।
এত বিতর্কের মাঝেও একপ্রকার নির্বিকারই রয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। ২০১৪ সালে, কুইন্সল্যান্ডের এই খনি থেকে কয়লা উত্তোলনে অস্ট্রেলিয় সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়, ভারতের আদানি গ্রুপ।
এ বিষয়ে কুইসল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জাস্টিন মার্শাল বলেন, কয়লাখনির কারণে এ এলাকার অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে। গবেষণাগারে আমরা প্রমাণ পেয়েছি এর ফলে প্রায় ৯৩ শতাংশ কোরাল ধ্বংস হয়ে যাবে।
বিশ্বদ্যিালয়টির আরেক অধ্যাপক টেরি হুগো বলেন, এই কয়লা খনি প্রকল্পটির কারণে অ্যাবোট বন্দর দিয়ে জাহাজ চলাচলের ফলে হুমকির মুখে পড়বে সাগরজলের জীববৈচিত্র্য। আমরা গত ১৯ বছর ধরে যেসব সতর্কবার্তা দিয়ে আসছি তার কিছুই গায়ে মাখছেন না অস্ট্রেলিয় সরকার।
তবেদেশটির জ্বালানি লবিস্ট মাইকেল রুশ এ বিষয়টি নিয়ে বলেন, এটা অর্থনীতির (কয়লাখনি) একটি বড় যোগান। দিনকে দিন বিশ্বে যেভাবে কয়লার চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, তাই কয়লাখনিটি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরিবেশকর্মীরা যেভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে সেরকম কোন ক্ষতি হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। চ্যানেল ২৪
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন