রিয়াদের কাছে গুরুত্ব বেড়েছে ঢাকার। বিশেষ করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী সামরিক জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দেশটির সঙ্গে সম্পের্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এরপর থেকেই সৌদি আরব বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে শুরু করে।
গত বছরের শুরুতে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্কের অবনতি হলে তখন সৌদিকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে দেশটির পাশে দাড়ায় বাংলাদেশ। সে সময় ইরানে সৌদি আরবের দূতাবাসে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল ঢাকা। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য ইরানের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিল ঢাকা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু এবং ইয়েমেনে শিশু নিহতের ঘটনায় জাতিসংঘে সৌদিকে সমর্থন জানানোর মধ্য দিয়েই মূলত বাংলাদেশ সৌদির কাছে গুরুত্ব পেতে শুরু করে। এ কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ এবং গুরুত্বের মাত্রা বেড়েছে। যা বিগত কয়েক বছরের সঙ্গে তুলনা করলে বিষয়টা অনুমেয়।
সামরিক জোটের বিভিন্ন কার্যক্রমে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরব একযোগে কাজ করবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। এই জোটে থেকে সন্ত্রাস প্রতিরোধে ইনফরমেশন বিনিময়, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি কাজে যুক্ত থাকবে বাংলাদেশ। তবে মক্কা মদিনা রক্ষার জন্য অতীতের মতো ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে দেশটিতে সৈন্য পাঠাবে বাংলাদেশ। ঢাকার পক্ষ থেকে এমন সুস্পষ্ট বার্তায় সৌদি আরব বাংলাদেশের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিগত বছরগুলোর থেকে বর্তমানে সৌদির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জাগায়টা বেশ গাঢ় হয়েছে। এর একটা কৌশলগত রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক ফোরামে সৌদির পক্ষে বাংলাদেশের জোরালো সমর্থন বেশ বড় ধরনের উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা যমুনা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাম্প্রতিককালে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে সেনা পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ সম্মতি দেয়ার পর দুই মুসলিম দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও গত বছর সেখানে গিয়েছেন। এ ছাড়া মক্কা-মদিনার ইমাম এবং দেশটির শূরা কাউন্সিলের স্পিকারও বাংলাদেশ সফর করেছেন।
আরব ইসলামিক আমেরিকান (এআইএ) সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিতে চারদিনের সরকারি সফরে আজ শনিবার ঢাকা ত্যাগ করবেন। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে সেখানে যাচ্ছেন তিনি। ২১ মে প্রধানমন্ত্রী ‘আরব ইসলামিক আমেরিকা সামিটে’ যোগ দেবেন। এতে দুটি দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ প্রভাবশালী দেশ হিসেবে সৌদি আরব বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির শ্রম বাজারে প্রায় ২৫ লাখ বাংলাদেশী কর্মী সেখানে কাজ করছেন। বাংলাদেশ দেশটিতে আরও বেশি জনশক্তি রফতানি করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরে সাইড লাইন বৈঠকে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
jamunanews24
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন