সিকিম সেক্টরের দোকলাম এলাকায় ভারতীয় ও চীনা সৈন্যদের মধ্যে অচলাবস্থার মধ্যে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুন জেটলি শুক্রবার পার্লামেন্টকে আশ্বস্ত করেছেন, যেকোনো ঘটনা মোকাবিলায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত। দোকলাম সঙ্কটের মধ্যে চীন তিব্বতে সৈন্য পাঠাচ্ছে- এমন খবরের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম না দেওয়ার কারণ জানতে চাইতে জেটলি বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। তিনি দোকলাম নিয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু না বলেই এই জবাব দেন।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে ৪০ দিনের থাকার কথা থাকলেও মাত্র ২২ দিনের সামরিক উপকরণ আছে- কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) এমন এক প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কারো সংশয় থাকা উচিত নয়।
দোকলাম অচলাবস্থা নিয়ে চীনা নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরে তাদের অবস্থান জোরদার করার প্রেক্ষাপটে ভারতের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভারতের আঙিনায় চীনা নৌবহরের উপস্থিতি ভারতের কাছে অস্বস্তিদায়ক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে উপকূলীয় নগরী ঝানজিয়াঙে পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভির (পিএলএএন) একটি কৌশলগত সাউথ সি ফ্লিটের (এসএসএফ) ঘাঁটি ভারতীয় একদল সাংবাদিকের সামনে তুলে ধরা হয়। চীনের এসএসএফের জেনারেল অফিসের উপ-প্রধান ক্য. লিয়াং তিয়ানজুন বলেন, আমার মতে, ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় যৌথভাবে ভূমিকা পালন করতে পারে চীন ও ভারত। চীনা নৌবাহিনী তার বৈশ্বিক অবস্থান ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করার প্রেক্ষাপটে তিনি এই মন্তব্য করলেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, সে চায় দোকলাম ইস্যুতে চীন ও ভারত সংলাপে অংশ নিক। পিটিআইয়ের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নুরার্ট বলেন, ‘আমরা ওই পরিস্থিতির দিকে ঘনিষ্ঠ নজর রাখছি।’ তিনি বলেন, উভয় সরকারের সাথে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সংলাপে বসার জন্য উভয় সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি। আমরা বিষয়টিকে ওই পর্যায়ে রেখে দিয়েছি।
ভারতীয় ও চীনা সৈন্যরা সাত সপ্তাহ ধরে দোকালামে মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে। চীন ও ভুটানের মধ্যে বিরোধপূর্ণ দোকলাম মালভূমিতে চীনের একটি সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ করতে ভারতীয় সৈন্যরা সেখানে প্রবেশ করলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। চীন দাবি করেছে, তারা তাদের ভূখন্ডে রাস্তা নির্মাণ করছে, এতে বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার ভারতের নেই। ভারত বলছে, রাস্তা নির্মাণ করা হলে তাদের নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে। চীন বলছে, ভারত সৈন্য প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না।
চীন ও ভারতের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মির থেকে শুরু করে অরুনাচল পর্যন্ত ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে সিকিম সেক্টরে রয়েছে ২২০ কিলোমিটার। চীন দাবি করেছে, দোকলাম নিয়ে বেইজিংয়ের সাথে থিম্পুর কোনো বিরোধ নেই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন