ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরমিত রামরহিম সিংয়ের যৌন চাহিদা পূরণ করতে অল্প বয়সী মেয়েদের ধরে আনত তার নারী বাহিনী।
ওই নারী বাহিনী মেয়েদের ধরে আনার পর গুরমিতের কাছে ধর্ষিত হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিত। পরে রাতের বেলা তাদের গুরমিতের গুহায় ঢুকিয়ে দিত।
গত মাসে দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের মামলায় ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধানগুরু গুরমিতকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়ার পর এমন বিস্ফোরক তথ্য বেরিয়ে আসছে।
সম্প্রতি পুলিশ গুরমিতের গোপন গুহায় তল্লাশি চালিয়েছে। এ সময় তার এক গোপন সেনাবাহিনী সম্পর্কেও জানা যায়। কুরবানি ডাল নামের এ বাহিনীর কাজ ছিল জীবনের বিনিময়ে হলেও ধর্ষক বাবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এদিকে যে নারীরা গুরমিতের জন্য প্রতিরাতে অল্প বয়সী মেয়ে সরবরাহ করত তারাও এক সময় এ ভণ্ড গুরুর কাছে ধর্ষিত হয়েছিল।
জানা গেছে, প্রতি রাতে নতুন নতুন মেয়ে লাগত ধর্ষক বাবার। তার কাছ থেকে নাবালিকারাও রেহাই পেত না।
তবে শুধু যৌন হেনস্থা নয়, অনেক শিষ্যের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে শারীরিক সম্পর্ক করত গুরমিত। এ শিষ্যরা ধর্ষক বাবার এতটাই বশ ছিল যে তিনি যা বলতেন তারা অন্ধের মতো তাই করত।
পরে এ নারীরাই নতুন নতুন মেয়ে ধর্ষক বাবার জন্যে ধরে আনতেন। আর ধর্ষকগুরুর ডেরায় বহু রাজনৈতিক নেতাও বিনোদনের জন্য যাতায়ত করতো। তারা সেখানে মদ ও নারী নিয়ে মত্ত থাকত।
গুরমিতের নারী বাহিনীর সদস্যরা মূলত রোবটের মতো কাজ করত। তাদের কোনও মানবিকতা ছিল না, কোনও অনুভূতি থাকত না। তারা ছোট ছোট শিশুর চিৎকারেও ক্ষান্ত হতো না। বরং নির্বিকার ভাবে মেয়েদের বাবার গুহায় ঢুকিয়ে দিত।
ধর্ষক বাবার যে নারী শিষ্যদের কারণে কারণে শাস্তি পেলেন, তাদের একজন বলেন, গুরমিতের নারী দলকে বিষকন্যা বলা হত ।
ওই নারী বলেন, তিনি গুহার বাইরে নিরাপত্তা দিতেন। তখনই দেখেছিলেন বহু মেয়ে সেখান থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউই বলত না, তাদের সঙ্গে কী হয়েছে।
তিনি বলেন, মূলত সেখানে মেয়েদের ঢোকানো হত। তারপর বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তাদের প্রলোভন দেখানো হত। তারপর বলা হত, বাবা তাদের নির্বাচিত করেছেন, নিজের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্যা হিসেবে। এবার তাদের পবিত্র করার জন্যে নিজের কাছে ডাকবে।
শুধু ধর্ষিতা হওয়াই নয় গুরমিতের জন্য রান্না থেকে কাপড় কাচাসহ সব কাজই করত হতো ধর্ষিতা নারীদের।
এদিকে বিষকন্যারা ডেরার সব মেয়েদের ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখত। কেউ বাবার বিরুদ্ধে মুখ খুললে দিনের পর দিন খাবার জুটত না। এছাড়া আরও নানা ধরনের অত্যাচার চলত।
এদিকে ডেরায় থাকা ছেলেরা কোনও মেয়ের দিকে তাকালে তাদে কড়া শাস্তি দেয়া হত। এদিকে দলিত নারীদের ডেরায় কাজের লোকে পরিণত করা হয়েছিল।
ভণ্ডগুরু গুরমিত সিংকে ধর্ষণসহ নানা অপকর্মে সহযোগিতা করত এখনও প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়ানোর কারণে আইনশৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্র: এবিপি আনন্দ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন