ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র বিমান শাখার কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই তেহরান ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধের বিষয়ে নতুন করে ইরানের ওপর যে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ এই বক্তব্যের মাধ্যমে তা মূলত উড়িয়ে দিলেন। তিনি বলেন, “যদি দেশের চারপাশজুড়ে দেয়াল তৈরি করা হয় তাহলেও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন স্থগিত করা হবে না। কারণ এটা সম্পূর্ণভাবে দেশীয় প্রযুক্তি এবং নিজস্ব শিল্প।”
জেনারেল হাজিজাদেহ আরো বলেন, “আইআরজিসি ইরানি জাতির স্বার্থ রক্ষা করছে এবং কোনোভাবেই তাদেরকে ধোঁকা দেয়া যাবে না।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইআরজিসি নিয়মিতভাবে তার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়ে যাবে কারণ দেশের নিরাপত্তা হচ্ছে সবার আগে।
ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আশংকা বাতিল করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশ এত শক্তিশালী যে, কেউ হামলা করতে সাহস দেখাবে না বরং এ ধরনের হুমকি হচ্ছে শত্রুদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার শত্রুতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা হচ্ছে ওয়াশিংটনের অপরিবর্তনীয় ইস্যু এবং কৌশল। জেনারেল হাজিজাদেহ বলেন, ইহুদিবাদীদের মাধ্যমে মার্কিন নীতি নির্ধারিত হয় এবং এসব হচ্ছে তারই ফসল।
কোয়েটায় বিস্ফোরণ
পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল সাত পুলিশকর্মীরা। জখম হয়েছেন আরো ২২ জন। বুধবার সকালের দিকে পুলিশকর্মীদের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে ওই হামলা হয়। গাড়িটিতে ৩৫ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। বোমাটি রাস্তার ধারে পুঁতে রাখা ছিল। এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কোয়েটার পুলিশ অফিসার সাবির মিল বলেন, পুলিশের একটি গাড়ি শহরের একটি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণে সাতজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আহতদের কোয়েটার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় উগ্রবাদীরা জড়িত বলে অনুমান পুলিশের।
বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে। উগ্রবাদীরা পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাবেন। এদিকে বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে সেনা ও পুলিশ। একইসঙ্গে উগ্রবাদীদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু হয়েছে। যদিও রাত পর্যন্ত কোনো উগ্রবাদী সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করে নেয়নি।
অন্যদিকে আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশে দু’টি আত্মঘাতী হামলা ও এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮০। যার মধ্যে অধিকাংশই হলেন পুলিশকর্মী। মঙ্গলবার পুলিশবাহিনীকে লক্ষ্য করে একদল সন্ত্রাসী প্রথমে এলোপাথাড়ি গুলি ও পরে দুই সন্ত্রাসী আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের উড়িয়ে দেয়। তাতে মৃত্যু হয় ৬০ জনের। জখমের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা সংকটজনক। নিহতদের মধ্যে পাকটিয়া প্রদেশের পুলিশ প্রধানও রয়েছেন। এদিকে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারাই উগ্রবাদীদের ভিতরে ঢুকতে সহযোগিতা করেছিল বলে অনুমান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন