ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে উত্তর কোরিয়া। তাদের পরমাণু অস্ত্র মজুতের সংখ্যা আগামী চার বছরের মধ্যে ১০০-তে পৌঁছবে। শুধু তাই নয়, উত্তর কোরিয়া দ্রুত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে এমনটাই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মার্কিন থিংক ট্যাংক র্যান্ড কর্পোরেশন।
র্যান্ড কর্পোরেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক হিসেবে মনে করা হচ্ছে- উত্তর কোরিয়ার হাতে এখন ১৩ থেকে ২১টি পরমাণু বোমা বানানোর উপযোগী উপাদান রয়েছে। এসব বোমা ২০২০ সালের মধ্যে তৈরি করা হবে। এছাড়া, এই সময়ের মধ্যে আরও ৫০ থেকে ১০০টি পরমাণু বোমা বানানোর উপযোগী উপাদান দেশটি তৈরি করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, মিশ্র পন্থা অবলম্বন করে পিয়ংইয়ং পরমাণু বোমার উপাদান তৈরির খরচও কমিয়ে আনতে পারবে। ফলে পরমাণু বোমা তৈরির উপাদান ব্যাপক মাত্রায় তৈরি করতে পারবে উত্তর কোরিয়া।
গত কয়েক দফায় একাধিকবার পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। যেগুলি সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমার পরীক্ষা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, বিমান বা যুদ্ধজাহাজে পরমাণু বোমা মোতায়েনের সক্ষমতাও তাদের আছে বলেও দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। আমেরিকার মতো দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কাজ করে চলেছে এখন উত্তর কোরিয়া। ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে এই ক্ষেত্রে পুরো সক্ষমতা অর্জন করবে পিয়ংইয়ং। যা কিনা ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘আমেরিকা পরমাণু খেলা শুরু করেছে! চলতে থাকবে পরমাণু পরীক্ষা’
আমেরিকার হুমকির মোকাবিলায় নিজের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি শক্তিশালী করা অব্যাহত রাখবে পিয়ংইয়ং। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে সম্প্রতি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দেন পিয়ংইয়ংয়ের আধিকারিকরা। তাঁরা বলেন, আমেরিকা পরমাণু খেলা শুরু করেছে। কাজেই পিয়ংইয়ং তার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাবে।
এর আগে উত্তর কোরিয়ার পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার অ্যান টং-চুন সম্প্রতি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে আন্তঃসংসদীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে বলেন, আমেরিকার হুমকির কারণেই তার দেশের পরমাণু অস্ত্র প্রয়োজন। এই অস্ত্র শুধুমাত্র আত্মরক্ষার্থে তৈরি করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কারণে আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে। ট্রাম্প এখন পর্যন্ত বহুবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন চালানোর হুমকি দিয়েছেন এবং জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।
ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু পিয়ংইয়ং বারবার বলছে, যতদিন আমেরিকা ও তার মিত্রদের উত্তর কোরিয়া বিরোধী বিদ্বেষী নীতি বজায় থাকবে ততদিন নিজের সামরিক সক্ষমতা শক্তিশালী করে যাবে পিয়ংইয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন