চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সম্মেলনে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য চীনের নেতা নির্বাচন এবং পরবর্তী নেতা উন্নয়নের জন্য কোন পথে হাঁটবেন তা নির্ধারন করা হয়। এবারের সম্মেলনে যেন এর চেয়ে একটু বেশি কিছুই করলেন। চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এ বছর তারা চীনের আগামী ৩০ বছরের জন্য, ২০৫০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনার রূপরেখা প্রণয়ন করলেন।
কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে (সিপিসি) চীনের নেতারা বলেছিলেন, চীনের সামনে সবচেয়ে বড় দুটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষের ক্রমবর্ধমান বৈষয়িক- সাংস্কৃতিক চাহিদা এবং চীনের সকল মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র,বাসস্থান আর শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের জন্য উৎপাদন ব্যবস্থার সংস্কার।৩০ বছর পর আজকের চীনের চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজকের চীনের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষের উচ্চ জীবনবনযাত্রার মান চাহিদা পূরণ করা। শি জিনপিং তার বক্তৃতায় বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে এখন চীন সক্ষম, তাই তাঁদের জীবন মানের উন্নয়নই এখন চীনের প্রধান লক্ষ্য।
আর এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সিপিসি সম্মেলনে দুটি লক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। একটি পরিমিত সমৃদ্ধিশীল সমাজ নির্মাণ। ব্যাপকতর সমৃদ্ধি লাভ আর দারিদ্র্যের সম্পূর্ন বিমোচন।আর দ্বিতীয় লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত এবং আধুনিক চীনের প্রতিষ্ঠা। ২০৫০ সালে সিপিসির ১০০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী উদযাপনে একটি সমৃদ্ধিশীল, একতাবদ্ধ আধুনিক সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা, আর সুশাসন নিশ্চিত করা। সেই চীন হবে একটি বৈশ্বিক পরাশক্তি, আর উন্নত বিশ্বের বড় অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে নেতৃস্থানীয়।
আর এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে চীনের নেতার কিছু পথ নির্দেশ করেছেন। আর প্রথম লক্ষ্য অর্জনে তারা ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি আধুনিক চীনা সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবেন। এই আধুনিক চীনা সমাজ বৈজ্ঞানিক গবেষণা আর উদ্ভাবনে পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেবে, পরিবেশ ভারসম্য রক্ষা, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সম্প্রসারণ আর নগর এবং গ্রামের মধ্যে উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ব্যবধান কমিয়ে আনা, একটি স্বচ্ছ আমলাতন্ত্র আর উচ্চ জীবন মান অর্জন করবে।
আর এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে চীনের নেতৃত্বকে একটি কার্জকর উন্নয়ন পথের নির্ধারণ করা। আর এজন্য চীনকে উন্নয়নকেই সবার আগে প্রধান্য দিতে হবে। বাজার ব্যবস্থা আর অর্থনৈতিক সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে, যাতে বাজার আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়। যা অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে দূর করবে। চীনকে আরও উদার অর্থনৈতিক নীতির সন্নিবেশ করতে হবে যাতে বাজার এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত হয়। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, বন্দর এবং শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন এবং নির্মান চালিয়ে যেতে হবে তাঁদের।
আর চীনের নেতাদের নিশ্চিত করতে হবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেদের কর্মপরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার মানসিকতা। আর সম্পদ আর আয়ের বৈষম্য চীনের সমাজের জন্য বড় মাথা ব্যাথার কারন হয়ে উঠতে পারে। চীনের নেতাদের এই অর্থনৈতিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে কাজ করে যেতে হবে।
কিন্তু এত কিছু কিন্তু চীনের সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয় না। চীনকে তাই নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যেতে হবে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ গুলোর মোকাবিলার জন্য।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন