মুসলিমদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাসের শহর জেরুজালেমকে দখলদার ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ঘোষণার বিরোধিতা করেছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ। আর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার জবাব দিতে বুধবার বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছে মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব মুসলিম কো-অপারেশন-ওআইসি।
.
জেরুজালেম সংকট নিয়ে তুরস্কের ঐতিহাসিক নগরী ইস্তাম্বুলে শুরু হওয়া এই শীর্ষ সম্মেলনে ওআইসিভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশের ৪৮ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া এতে অংশ নিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো।
তবে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট কার্যত এই সম্মেলন বয়কট করেছে। এতে সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের কোনো রাষ্ট্র কিংবা সরকার প্রধান অংশ নেয়নি। তারা সম্মেলনে মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।
সম্মেলনে সৌদি আরব তাদের ধর্মমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে। সৌদির মিত্র মিশর আর সংযুক্ত আরব আমিরাত পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কর্মকর্তা। বাহরাইন তাদের আইনমন্ত্রীকে এই শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলনে পাঠিয়েছে।
এমন সময় সৌদি জোট এমন কাণ্ড ঘটাল যখন সৌদি আরবের সম্মতিতে ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। ট্রাম্পের ঘোষণায় বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ আছে সৌদি আরব।
এমনকি সৌদি গণমাধ্যমে জেরুজালেম নিয়ে সংবাদ প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটি। সৌদির প্রায় সবক’টি শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে জেরুজালেমের পরিবর্তে দেশটিতে সিনেমা হল বানানোর অনুমতির খবর নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণা নিয়ে যখন সৌদি জোটের বাইরে গোটা মুসলিম বিশ্ব উত্তাল, তখন ‘শান্তির বার্তা’ নিয়ে ইসরাইল সফর করেছে বাহরাইনের একটি প্রতিনিধিদল। ওই প্রতিনিধিদলকে ফিলিস্তিনে ঢুকতে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা।
উল্লেখ্য, সৌদি নেতৃত্বাধীন এই জোটই কাতারের উপর সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করেছে। এই সম্মেলনে কাতারের আমির এবং প্রেসিডেন্ট অংশ নিয়েছেন। শুরু থেকেই ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে কাতার।
এদিকে, জেরুজালেম ইস্যুতে আরব দেশগুলো বিশেষ করে সৌদি জোটের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। তিনি বলেন, ‘জেরুজালেম ইস্যুতে কিছু আরব দেশের প্রতিক্রিয়া খুবই দুর্বল। তারা যেন যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ে ভীত।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে প্রতিষ্ঠিত হয় বর্ণবাদী ইসরাইলি রাষ্ট্রের। পশ্চিমা খৃস্টান রাষ্ট্রগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং একের পর এক তাদের বাসভূমি দখল করে যাচ্ছে ইসরাইল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন