স্বদেশ ও স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন করায় এক দশক আগে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরতায় পা হারানো এক ফিলিস্তিনিসহ চারজনকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম আবু তুরায়াহ। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদ করার সময় শুক্রবার গাজা সীমান্তে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরো ৩ ফিলিস্তিনিকেও হত্যা করা হয়।
২০০৮ সালে গাজা বর্ডারে ইসরাইলি পতাকা নামিয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলনের সময় ইব্রাহিম আবু তুরায়াহকে গুলি করে ইসরাইলি বাহিনী। এতে পা হারায় তিনি। ওই যুদ্ধে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে দখলদার ইহুদি সেনারা।
ইসরাইলি বাহিনীর চরম মাত্রায় আগ্রাসী ভূমিকার কারণে শুক্রবার প্রতিবাদে অংশ নিষেধ করেছিলো তার বন্ধুরা। কিন্তু সব নিষেধ অমান্য করে আবু তুরায়াহ।
মৃত্যু মুহূর্তে পঙ্গু ফিলিস্তিনির শেষ অপরাজেয় বাণী, ‘আল কুদ্দুস (জেরুজালেম) আমাদের ভূখণ্ড, আমরা অবৈধ দখলদার ইসরাইলি রাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবো না।’
মাথায় ফিলিস্তিনের পতাকা বেঁধে হুইল চেয়ার নিয়ে হাজির হন। আর স্বাধীন ফিলিস্তিনের পাতকা বাঁধা তার মাথায় গুলি করে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল।
২৯ বছর বয়সী আবু তুরায়াহ ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন অবিবাহিত। তিনি গাজায় পিতা-মাতার সঙ্গে থাকতেন। ইসরাইলি আগ্রাসানে দুই পা হারানো এ যুবক মাছ শিকার করেই জীবনযাপন করছিল। কিন্তু দুই পা হারানো এ যুবক কঠিন অর্থনৈতিক টান-পোড়নে রাস্তায় থাকা গাড়ী পরিচ্ছন্নতার কাজে নেমে আসে।
ইবরাহিম আবু তুরায়াহ-এর মৃত্যুতে ফিলিস্তিনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একজন তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘মনে হয় দখলদার আজ প্রতিজ্ঞা করেছে, এ-অর্ধ যুবককে পূর্ণাঙ্গ মৃত্যুদণ্ড দিয়ে তাদের দায় ও পূর্ব-ভূল সংশোধনের সময় এসেছে। তাই সরাসরি তার মাথায় গুলি করে।যাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘কিছু মুমিন তাদের রবের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে, কতক অপেক্ষা করছে …।’
এদিকে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় বিক্ষোভে বড় ধরনের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি আহত হন যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী এবং তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, তুরস্ক, ইরান, রাশিয়া ও চীনের পাশপাশি জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা ট্রাম্পের এই একতরফা ঘোষণার নিন্দা জানায়।
ট্রাম্পের ঘোষণার পর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস গণঅভ্যুত্থানের ডাক দেয়। সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দেয় অপর সংগঠন ফাতাহ। এরপর বিক্ষোভে গুলি করে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে দখলদার ইসরাইলি সেনারা। আটক করে কয়েশ’ ফিলিস্তিনিকে।
সূত্র: আনাদুলো এজেন্সি, আল আরাবিয়া ও ডেইলি সাবাহ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন