ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ধনকুবের সাবিহ আল-মাসরিকে আটক করেছে সৌদি আরব। তিনি মূলত জর্ডানের বড় ব্যবসায়ী। তার মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেম ইস্যুতে জর্ডান সরকারকে রাজি করাতেই তাকে আটক করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও রিয়াদের পক্ষ থেকে তার আটকের কারণ বলা হয়নি এবং তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগও গঠন করা হয়নি।মাসরির পরিবারের বরাত দিয়ে আলজাজিরা ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
এক ব্যবসায়িক সফরে তিনি সম্প্রতি রিয়াদ যান।আলজাজিরা বলেছে, ৮০ বছর বয়সী ওই ব্যবসায়ী জারা ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং আরব ব্যাংকের চেয়ারম্যান।আরবভিত্তিক ওয়েবসাইট রাই আল-ইয়ম শনিবার বলেছে, সৌদি ও জর্ডান নাগরিক মাসরির ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়নি।খবরে বলা হয়েছে, মাসরি জর্ডানের খুবই প্রখ্যাত একজন ব্যবসায়ী। তিনি ফিলিস্তিনি ধনকুবের মুনিব আল-মাসরির কাজিন। তিনি ফিলিস্তিনি সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন এবং মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ রয়েছে তার।
রয়টার্স বলেছে, মঙ্গলবার আটক হওয়ার কারণে মাসরি জর্ডানের রাজধানী আম্মানে একটি ডিনারে যোগ দিতে পারেননি। বন্ধু-বান্ধব ও ব্যবসায়ীক অংশীদারদের নিয়ে ওই পার্টি হওয়ার কথা ছিল।প্রসঙ্গত, সৌদি আরবে সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানে সৌদি রাজ পরিবারের সদস্য এবং বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীরাও আটক হয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, মাসরির বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ থাকতে পারে, যার কারণে তাকে আটক করা হয়ে থাকতে পারে।
তবে জর্ডানের রাজনীতি ও বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের স্বীকৃতিকে যাতে জর্ডান সমর্থন করে সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এর আগে জর্ডান ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয় এবং ট্রাম্পের ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে।রয়টার্স বলছে, গত বুধবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ওআইসির বৈঠকে যাতে জর্ডানের বাদশা যোগ না দেন সেজন্য রিয়াদ মাসরিকে আটক করে থাকতে পারে। যদিও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। তিনি আল-আকসার কাস্টোডিয়ান এবং ট্রাম্পের স্বীকৃতির অন্যতম সমালোচক।জর্ডানের সংসদ সদস্য ওয়াফা বানি মুস্তফা গত সপ্তাহে আলজাজিরাকে বলেন, ‘বিন সালমান (সৌদি যুবরাজ) ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের শর্তে রাজি করাতে, তাদের নেতৃত্ব ফলাতে এবং ট্রাম্পের তথাকথিত ‘আল্টিমেট ডিল’ বা চূড়ান্ত চুক্তিতে রাজি করাতে জর্ডানের অর্থনীতির গলা চিপে ধরার চেষ্টা করছে।’
উল্লেখ্য, ইসরাইল-ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্প ওই আল্টিমেট ডিল প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু তার কোনো ব্যাখ্য দেওয়া হয়নি।মাসরির আটকের ব্যাপারে বৈরুতের (লেবাননের রাজধানী) আমেরিকান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও সিনিয়র ফেলো রামি খোরি আলজাজিরাকে বলেন, ‘ওই ব্যবসায়ী জর্ডান ও ফিলিস্তিনের জন্য এক বড় ব্যক্তিত্ব।’তিনি বলেন, ‘জর্ডান সরকারের টাকার সমস্যা হলে আরব ব্যাংকই তা সরবরাহ করে। তাছাড়া মাসরি জর্ডান ও ফিলিস্তিনে একজন প্রভাবশালী বিনিয়োগকারী। সুতরাং সৌদি আরব জর্ডানকে যে বার্তা দিচ্ছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
poriborton
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন