মাত্র দুদিন আগেই ইসরাইলের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নমন্ত্রী উরি অ্যারিয়েল দখলদার সেনাদের প্রতি আরও বেশিসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও আহত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর পর শুক্রবারই অবরুদ্ধ পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কয়েক ডজনকে আহত করেছে ইসরাইলি সেনারা।
পশ্চিমতীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ ইহুদি বসতি ‘বেট এইল’-এর কাছে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ইসরাইলি সেনারা।
ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, হেবরন শহরের আল খলিলে তিন ফিলিস্তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ২২ জন কাঁদানে গ্যাসের শ্বাসকষ্টের শিকার হয়েছেন।
এ ছাড়া নাবলুস শহরে তিনজন রাবার বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন। সেখানে আরও ৩২ জন কাঁদানে গ্যাসের কারণে অক্সিজেন স্বল্পতায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত গুলি ও রাবার বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন ২৫ জন।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনের রাজধানী পবিত্র জেরুজালেম শহরকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে সমগ্র ফিলিস্তিনে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। ট্রাম্পের এ ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছে সব মুসলিম দেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
এদিকে জেরুজালেমকে রক্ষায় ফিলিস্তিনের ফাতাহ সরকার ও গাজার হামাস সরকার তৃতীয় ইনতিফাদা বা গণপ্রতিরোধের ডাক দিয়েছে।
এতে অংশ নিয়ে পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজায় এ পর্যন্ত ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও কয়েক হাজার আহত হয়েছেন।
এমন নিপীড়নের মধ্যেই গত বুধবার ইসরাইলের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নমন্ত্রী উরি অ্যারিয়েল ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও আহত করার উসকানি দেন।
উরি অ্যারিয়েল দাবি করেন, গত কয়েক দিনে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এতে ‘ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী’দের হতাহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ওইখানে (পশ্চিম তীর) আমরা ভিন্ন নীতি অনুসরণ করব। এর উদ্দেশ্য হবে যারা আমাদের সঙ্গে সহাবস্থান করতে চায়, তাদের জন্য সুবিধা দেয়া। আর যারা ইহুদিদের ক্ষতি করতে চায়, তাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলা।
তিনি বলেন, আমাদের যেসব অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে তা কেন রাখা হয়েছে। আমরা তা ছুড়ে আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাচ্ছি; কিন্তু কেউ আহত হচ্ছে না। এখন সময় হয়েছে সেখানে (গাজা) আহত ও হত্যার। আমাদের উচিত না শুধু নিজেদের রক্ষা করা- আমাদের উচিত আক্রমণ করা। কেউ যদি আমাদের আক্রমণ করতে আসে, তা হলে আগেই তাকে আক্রমণ করা।
২০১৭ সালে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজা উপত্যকায় ৫৯ বার হামলা চালিয়েছে। এসব হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল সুড়ঙ্গপথ, প্রশিক্ষণ শিবির ও অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র। বেশিরভাগ হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল হামাসের স্থাপনা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন