বিচিত্র দুনিয়ায় অনেক ঘটনাই ঘটে যার ব্যাখ্যা আজও দিতে পারেনি আধুনিক বিজ্ঞান। যেমন, মানুষের মৃত্যুর পর দেহকে কবরস্থ করা হয়ে থাকে। কিন্তু অতীতে এমন অনেক নজির রয়েছে যে, কবরস্থ করার পরেও কোনো কোনো মানুষ জীবিত হয়ে বের হয়ে এসেছেন। এবং আরও বেশ কিছুদিন বহাল তবিয়তে পৃথিবীতে বিচরণ করে গেছেন। তেমনই কিছু ঘটনা নিয়ে এবারের আয়োজন।
১. ভারতের উত্তর প্রদেশে ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালের আগস্টে। মাত্র ছয় বছরের একটি কন্যা শিশুকে ঘিরে সেবার রহস্য দানা বাঁধে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, এক প্রতিবেশি দম্পতির সঙ্গে ওই শিশু গ্রামের কাছের মেলায় ঘুরতে যায়। কিন্তু ওই দম্পতি যখন ফিরে আসে, দেখা যায় সঙ্গে শিশুটি নেই। পরে শিশুটির অভিভাবকেরা খোঁজ করলে দেখতে পায় তাকে কবর দেয়া হয়েছে। দেরি হয়ে গেলেও সেই কবর খননের ব্যবস্থা করা হয়। সবার ধারণা ছিল শিশুটি হয়তো মারাই গেছে। কিন্তু সবাই অবাক হয়ে দেখে সে তখনও বেঁচে আছে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। কিন্তু মাটির নিচে এতটা সময় কবরস্থ থাকলেও কিভাবে সে বেঁচেছিল তা এক রহস্য। তার চেয়ে বড় রহস্য হচ্ছে, ওই দম্পতি কেন শিশুটিকে কবর দিয়েছিল। এই রহস্যের সমাধান আজও হয়নি।
২. চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ডংডং প্রদেশে ২০১৪ সালে এক নারী মৃত সন্তান প্রসব করেছেন ভেবে তার সদ্যোজাতকে কবর দেয়া হয়। কিন্তু কবর দেওয়ার দু'ঘণ্টাও বেশি সময় পরে অলোকিকভাবে বেঁচে উঠে শিশুটি। ঐ নারীর স্বামী হি ইয়ং জানান, তার স্ত্রীর প্রসব ব্যাথা ওঠায় তাকে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। কিন্তু ঘরেই স্ত্রীর বাচ্চা প্রসব হয়ে যায়। ব্যাথায় কাতর স্ত্রীর কাছে গেলে সে স্বামীকে জানায়, তিনি মৃত বাচ্চা প্রসব করেছেন। কেননা সদ্যজাত শিশুর শরীরে তখন প্রাণ ছিল না। ফলে বাচ্চাকে ফেলেই স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে যান স্বামী।
সেখানে অবশ্য চিকিত্সকেরা স্ত্রীকে পরীক্ষা করে বলেন, সদ্যজাত বাচ্চাটি হয়তো বেঁচে থাকতে পারে। ভালো করে পরীক্ষা না করে কিছু বলা ঠিক হবে না। স্বামী দ্রুত বাড়ি ফিরে দেখেন তার শাশুড়ি এরই মধ্যেই বাড়ির সামনেই একটি গাছের নীচে শিশুটিকে কবর দিয়ে দিয়েছেন। স্বামী দ্রুত কবর খুঁড়ে বাচ্চাটিকে বার করে দেখেন সে তখনও জীবিত রয়েছে। তখন বাচ্চাটিকেও হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। সঠিক চিকিত্সার পর সে বেঁচে যায়।
৩. এই ঘটনাটি ঘটে ভারতে ২০০৮ সালে! মধ্যপ্রদেশের বোধনা গ্রামে এক কৃষক ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান। শব্দের উৎস অনুসন্ধান করে তিনি দেখতে পান একটি শিশুর মাথা মাটি থেকে বের হয়ে আছে। শিশুটিকে কবর দেয়া হলেও কোনোভাবে সেটি মাটি থেকে মাথা বের করতে পেরেছিল। দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান ওই কৃষক। চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটির বয়স ২ দিন। জন্মের পরই সম্ভবত তাকে কবর দেয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের যত্নের ফলে সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। তবে কে বা কারা শিশুটিকে কবর দিয়েছিল তা জানা যায়নি। শিশুটিও কিভাবে বেঁচে কবর থেকে বেরিয়ে এলো তাও এক রহস্য!
৪. ঘটনাটি ঘটে কানাডা’য় ১৯৩৭ সালে। এঞ্জেলো হেইস নামের এক ব্যক্তি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফলে তাকে কবরস্থ করা হয়। কিন্তু এর দু’দিন বাদেই একটি জীবন বীমা সংস্থা তার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিতের জন্য কবর খননের দাবি জানায়। ফলে হেইসের কবর খোঁড়া হয়। কিন্তু কবর খুঁড়ে অবাক হয়ে যান সবাই। একদম অক্ষত, কিছুটা গরমও ছিল হেইসের দেহটি। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, হেইসের শরীরে প্রাণ রয়েছে। কয়েক মাস বাদে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। এরপর তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করে নিজের অভিজ্ঞতার রোমহর্ষক বর্ণনা দিতেন হেইস।
৫. যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনায় ১৯১৫ সালে এসি ডানবার নামের এক নারী মৃগী রোগের কারণে অসুস্থ হলে চিকিৎসকেরা একসময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাকে দ্রুত কবর দেয়ার ব্যবস্থা হলেও তার বোনের অনুরোধে কিছুটা দেরি করা হয়। এসময়টাতে তাকে কফিনে রাখা হয়। দু’দিন বাদে তাকে কবর দেয়ার উদ্দেশ্য কফিন খোলা হলে দেখা যায় তার দেহে প্রাণ আছে। শুধু তাই নয়, কফিন খুলতেই তিনি হাসি মুখে উঠে বসেন। এই ঘটনার পর প্রায় ৪৭ বছর তিনি বেঁচে ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন