মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার এক বছর খুব কাছে থেকে দেখেছেন সাংবাদিক ও লেখক মাইকেল ওলফ। এই সময়ের নানা গোপন তথ্যে ঠাসা তার বই ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি : ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ ঝড় তুলেছে তামাম দুনিয়ায়। বইতে প্রকাশিত হয়েছে হোয়াইট হাউসে নানা পদে কর্মরত ২০০ কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার। ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে লেখকের ব্যক্তিগত কথোপকথনের তথ্যও আছে বইতে। নতুন প্রেসিডেন্টের অন্দর মহলের খবর জানতে বইটি কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন মার্কিনসহ পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ। প্রকাশের পর বইটির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এতেও কমেনি বইয়ের কাটতি। মানবজমিন পাঠকদের জন্য সাড়া জাগানো বইটির বাংলা অনুবাদ ছাপা হবে ধারাবাহিকভাবে। আজ ছাপা হচ্ছে এর প্রথম পর্ব।
২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা ম্যানেজার তখন কেলিয়ানি কনওয়ে। প্রচারণার তিনি একাধারে ম্যানেজার, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ভূমিকায়। তিনি ট্রাম্পওয়ার্ল্ড বা ট্রাম্প জগতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এদিন নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারে কাচে ঘেরা তার অফিসে দায়িত্বে বসলেন। নির্বাচনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রচারণাবিষয়ক সদর দপ্তর বা প্রধান কার্যালয়ের তেমন গুরুত্ব ছিল না। এটা দেখতে ছিল একটি কর্পোরেট অফিসের মতো। তবে একে তা থেকে আলাদা করেছিল দু’চারটা ডানপন্থি স্লোগান সম্বলিত পোস্টার।
নির্বাচনে ট্রাম্প যদি না হারেন তাহলে তিনি ভীষণ এক আনন্দ উদযাপন করবেন- এমন এক ভাবধারায় ছিলেন কনওয়ে। নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হবেন- এ বিষয়ে তিনি ছিলেন নিশ্চিত। তবে তিনি ধরে নিয়েছিলেন এই পরাজয় হবে ৬ পয়েন্টের নিচে। (অর্থাৎ বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে ট্রাম্প ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকবেন)। তা সত্ত্বেও ওই বিজয় ছিল অভাবনীয়। যদি পরাজয় দেখা দিত তাহলে তিনি (কনওয়ে) গতি পাল্টাতেন। বলতেন এই পরাজয়ের দায় তার নয়, এটা রেইনস প্রিবাসের ত্রুটির কারণে হয়েছে।
পরাজয় ঘনিয়ে আসা দেখে তিনি বন্ধুদের এবং বিশ্বের রাজনৈতিক মিত্রদের ফোন করে কাটালেন সময়। দায়ী করছিলেন প্রিবাসকে। বেশ কিছু টেলিভিশন প্রযোজক ও উপস্থাপকের সঙ্গে তিনি গড়ে তুলেছিলেন দৃঢ় সম্পর্ক। তাদের কাউকে কাউকে তিনি ব্রিফ করলেন। এসব সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি গত দু-একটি সপ্তাহ সক্রিয়ভাবে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি প্রত্যাশা করছিলেন নির্বাচনের পর একটি অন-এয়ার চাকরিতে স্থায়ী হবেন। (অর্থাৎ তিনি কোনো টেলিভিশনে স্থায়ী) চাকরি নিয়ে নেবেন। মধ্য আগস্টে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরে যোগ দেয়ার পর তিনি সতর্কতার সঙ্গে তাদের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হয়ে উঠেছেন প্রচারণায় প্রতি আক্রমণের কণ্ঠস্বর, সঙ্গে থাকতো ভয়ানক হাসি, ভয়াবহ আহত হওয়ার এক অভিব্যক্তি, স্থিরতা ও অদ্ভুত টেলিজেনিক মুখাবয়ব।
নির্বাচনী প্রচারণায় অন্য সব সাংঘাতিক ভুলের বাইরে প্রকৃত সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রকৃত যে দুষ্টচক্র ছিল তাকে তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। সেটা হলো রেইনস প্রিবাস, তার সহযোগী ৩২ বছর বয়সী ক্যাটি ওয়ালস ও তাদের সমর্থনকারী শিন স্পাইসার পরিচালিত রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি। সব কিছু থাকা সত্ত্বেও গ্রীষ্মের শুরুতে যখন ট্রাম্প মনোনয়ন জিতলেন তার পরেই নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি। রিপাবলিকানদের মূল অস্ত্র এটি। যখন ট্রাম্পের সমর্থন প্রয়োজন ছিল তখন তা তিনি তাদের কাছ থেকে পাননি।
কনওয়ের আক্রমণের প্রথম অস্ত্র ছিল এটি। অন্য বিষয়টি ছিল এই যে, সবকিছু থাকা সত্ত্বেও এক রসাতল থেকে প্রচারণা শিবির হামাগুড়ি দিয়ে বাস্তবেই উঠে দাঁড়ায়। টিমটি ছিল প্রচণ্ড রকম অযোগ্য। বাস্তবতার নিরিখে আধুনিক রাজনীতির ইতিহাসে তাদের সামনে ছিল সবচেয়ে খারাপ (অযোগ্য) একজন প্রার্থী। যখনই ট্রাম্পের নাম উচ্চারণ করা হতো তখনই কনওয়ে তার চোখ ঘুরিয়ে তাকাতেন। অথবা স্থির চোখে তাকাতেন। তবে এক্ষেত্রে তিনি ব্যক্তিক্রমীভাবে প্রকৃতপক্ষেই ভালো করেছেন। এর আগে কোনো জাতীয় প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না কনওয়ে। ট্রাম্প শিবিরে যোগ দেয়ার আগে তিনি স্বল্প সময়ের জন্য নিম্ন পর্যায়ের নির্বাচনী জরিপবিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠান চালিয়েছিলেন। তিনি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলেন, নির্বাচনের পরে তিনি হয়ে উঠবেন ক্যাবল নিউজ বা টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে রক্ষণশীলদের শীর্ষ স্থানীয় একটি কণ্ঠস্বর।
প্রকৃতপক্ষে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম বিশ্লেষক জন ম্যাকলাফলিন গত সপ্তাহে বা ওই রকম সময়ের মধ্যে বলা শুরু করলেন, বিষাদময় বিষয় হলো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোর কিছু সদস্য ট্রাম্পের অগ্রযাত্রাকে পাল্টে দিতে প্রকৃতপক্ষেই কাজ করছেন। (নির্বাচনে) বিজয়ের বিষয়ে সন্দিহান না ছিলেন কনওয়ে, না ট্রাম্প নিজে, না প্রচারণার কার্যত প্রধান তার জামাই জারেড কুশনার, না পারিবারিক নজরদারিকারী। তাদের অপ্রত্যাশিত এডভেঞ্চার সহসাই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী শুধু স্টিভ ব্যানন উল্লেখ করেন, তাদের পক্ষে দলবেঁধে মানুষ চলে আসবে। কিন্তু এটা ছিল ব্যাননের দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু এটা ছিল নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি।
ট্রাম্পের প্রচারণা গ্রুপটি ছিল ছোট এবং তাদের প্রায় সবারই ছিল খোলা দৃষ্টিভঙ্গি। তাদের মধ্যে একটি বিষয়ে একমত ছিল। এটা প্রকাশ করা হয়নি। তা হলো ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবেন না, শুধুই এটাই নয়, তার প্রেসিডেন্ট হওয়াও উচিত নয় সম্ভবত। এর আগে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার সঙ্গে কেউই শেষের ইস্যুটি মিলেয়ে নিতে পারেন না।
প্রচারণা যখন শেষ হয়ে আসে, তখন ট্রাম্প নিজে নিজেই আশাবাদী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে যখন বিলি বুশ টেপ প্রকাশ হয় এবং তা থেকে যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে তা থেকে তিনি নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছেন। তাকে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ ছিল রিপাবলিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস থেকে। এমন সময়, নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ই-মেইল তদন্ত নতুন করে শুরু করার ঘোষণা দেন এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কমি। এর মধ্য দিয়ে তিনি হিলারির নির্বাচনকে ঝুলিয়ে দেন। তার আশাকে শুষ্ক করে তোলেন। এর ফলে নির্বাচনে হিলারির যে ভূমিধস বিজয়ের কথা বলা হচ্ছিল, তাকে পাল্টে দিতে সহায়তা করেন জেমস কমি।
নির্বাচনী প্রচারণার বাইরে একবার বন্ধুর সম্পর্ক এমন সহযোগী স্যাম নুনবার্গকে ট্রাম্প বলেছিলেন- ‘বিশ্বে আমিই হতে পারি সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ।’
জবাবে তার কাছে নুনবার্গ জানতে চাইছেন ‘কিন্তু আপনি কি প্রেসিডেন্ট হতে চান?’ প্রকৃতপক্ষে এ প্রশ্নটা হওয়ার কথা ছিল ‘কেন আপনি প্রেসিডেন্ট হতে চান? তিনি একজন প্রার্থীর কাছে স্বাভাবিক এই প্রশ্ন না করে একটু ঘুরিয়ে মানসম্পন্ন করে ওই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তবে নুনবার্গ তার প্রশ্নের কোনো উত্তর পাননি।
আসলে এখানে বলার বিষয় যা তা হলো, এ প্রশ্নের কোনো উত্তর থাকার কথা নয়। কারণ, তিনি (ট্রাম্প) তো প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন না।
ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের বন্ধু রজার এইলস। তিনি মজা করে বলেন, যদি আপনি টেলিভিশনে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে প্রথমেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করুন। রজার এইলসের উৎসাহে উৎসাহিত ট্রাম্প তার ট্রাম্প নেটওয়ার্ক নিয়ে গুজব ছড়িয়ে দিতে থাকেন। এর একটি চমৎকার ভবিষ্যত ছিল।
রজাস এইলসে ট্রাম্প আশ্বস্ত করেছিলেন যে, তিনি এই নির্বাচনী প্রচারণা থেকে, আরো বেশি শক্তিশালী ব্রান্ড ও বলা হয়নি এমন সুযোগ সুবিধা নিয়ে, সরে আসতে পারেন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে রজার এইলসের সঙ্গে কথোপকথনের সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি যা স্বপ্ন দেখেছিলাম তার চেয়ে এটা অনেক বড়, অনেক মহৎ। আমি পরাজিত হওয়ার কথা ভাবছি না। কারণ, আমি পরাজিত হতে যাচ্ছি না। আমরা সার্বিকভাবে বিজয়ী হয়েছি।’ আর কি, তিনি তখনই নির্বাচনে পরাজিত হওয়া নিয়ে জনগণের প্রতিক্রিয়ার জবাবে বলতে থাকেন: এটা (অর্থাৎ নির্বাচনে জয়) চুরি করা হয়েছে!
তাই ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রচারণা দলের ক্ষুদ্র ব্যান্ডটি আগুনে জবাবে পরাজিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। তারা বিজয়ী হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।
কিন্তু রাজনীতিতে কাউকে তো পরাজিত হতেই হয়, যদিও সবাই মনে করেন, তিনিই বিজয়ী হবেন। যতক্ষণ একজন প্রার্থী মনে না করেন, তিনি বিজয়ী হবেন ততক্ষণ পর্যন্ত সম্ভবত তিনি বিজয়ী হতে পারেন না। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলো ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন বা প্রচারণা।
ট্রাম্পের জন্য মূল সুর ধ্বনিত হয়েছে তার প্রচারণা নিয়ে, কিভাবে ন্যক্কারজনক ছিল তাদের প্রচারণা। এতে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের সবাই ছিলেন লুজার বা পরাজিত। তিনি নিজে সমানভাবে বুঝতে পেরেছিলেন, হিলারি ক্লিনটনের শিবিরের সবাই ছিলেন মেধাবী বিজয়ী। এ বিষয়ে ট্রাম্প মাঝে মাঝেই বলতেন, ‘সেরাদেরকে তারা সঙ্গে পেয়েছে। আর আমরা পেয়েছি সবচেয়ে খারাপগুলোকে’। প্রচারণার বিমানে ট্রাম্পের সঙ্গে যারা সময় কাটিয়েছেন তারা একটি ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তাহলো, তার চারপাশে যারা ছিলেন তারা সবাই ইডিয়ট বা আহাম্মক।
ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বিষয়ক ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কোরি লেওয়ানডোস্কি। তাকে প্রার্থী (ট্রাম্পই) মাঝে মাঝে অবমাননা করেছেন। তাকে ছোট করে দেখেছেন। অনেক মাস ধরে ট্রাম্প তাকে ইংরেজিতে ‘দ্য ওয়ার্স্ট’ বা সবচেয়ে বাজে হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সবচেয়ে ২০১৬ সালের জুন মাসে তাকে চূড়ান্ত দফায় বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। তারপর থেকে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, (কোরি) লিওয়ানস্কিকে ছাড়াই তার প্রচারণায় ধস নেমে এসেছে। তিনি বলতেন ‘আমরা সব লুজার। আমাদের সব সদস্য কি কাজ করছেন তা কেউ জানেন না। তাই আমি চাই কোরি লিওয়ানস্কি ফিরে আসুন’। তবে ট্রাম্প খুব তাড়াতাড়িই তার দ্বিতীয় প্রচারণাবিষয়ক ম্যানেজার পল ম্যানাফোর্টের সঙ্গেও যথারীতি তিক্ত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
আগস্ট মাসের মধ্যে হিলারি ক্লিনটনের কাছে ১২-১৭ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েন ট্রাম্প। এ সময়ে মিডিয়া তার সামলোচনা করে গর্তের সাপ বের করে আনছে। তাদের মুখোমুখি হয়ে হয়েছে ট্রাম্পকে। নির্বাচনে বিজয় অর্জন করা তখন সুদূরপরাহত। এতে মোটেও ভীত হননি ট্রাম্প। এই করুণ সময়ে, প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় তার ‘হেরে যাওয়া প্রচারণা শিবিরের’ কাছে ছেড়ে দেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পের দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন টেড ক্রুজ। তার সমর্থক ছিলেন ডানপন্থি বিলিয়নিয়ার বব মারসার। তিনি ৫০ লাখ ডলার অনুদান দিয়ে ট্রাম্প শিবিরের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেন। তিনি ও তার মেয়ে রেবেকা তাদের লং আইল্যান্ড এস্টেট থেকে একটি হেলিকপ্টার নিলেন। তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন হ্যাম্পটনসে নিউ ইয়র্ক জেটস মালিক এবং জনসন অ্যান্ড জনসন ব্রান্ডের উত্তরসূরি উডি জনসনের গ্রীষ্মকালীন বাড়িতে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন