ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর বাসিন্দা সেলভারানি কানাগারাসুর বয়স ৪৮ বছর। বিয়ে করেননি তিনি। আর করেবেনও না। তবে এর কারণটি আশ্চর্যজনক! গরুর সেবাযত্নে জীবন ‘উৎসর্গ’ করেছেন দিন মজুর এই নারী।
মূলত নিজেদের ‘যোদ্ধা ষাঁড়টির’ দেখভাল করতে গিয়েই জীবনে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেন কানাগারাসু। ভারতে ষাঁড়ের লড়াই বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় ‘জালিকাট্টু’। ছুটতে থাকা ষাঁড়টি টপকে যাওয়ার চেষ্টা করেন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ব্যক্তি। যে জিতে যায়, তাকে পুরস্কার দেয়া হয়।
তরুণী বয়সেই নিজের বাবা ও দাদাকে অনুসরণ করে জালিকাট্টুর জন্য একটি ষাঁড় লালন-পালন করতে থাকেন কানাগারাসু। তার ষাঁড়টি জালিকাট্টুতে সাতবার অংশ নিয়ে পাঁচবার পুরস্কারও জিতেছে।
গত কয়েকশ বছর ধরে তামিলনাড়ুতে চলে আসছে জালিকাট্টুর চর্চা। জানুয়ারি মাসে স্থানীয় পঙ্গাল উৎসবের সময় এই লড়াই। শিংয়ে পুরস্কারটি বাঁধার জন্য এ সময় সেখানে কয়েক হাজার মানুষ আসে তাদের ষাঁড় নিয়ে।
মাঝে দুই বছর ধরে বন্ধ ছিল এই খেলা। ‘নির্মমতা’ বিবেচনা করে খেলাটি বন্ধ করে দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পরে এ নিয়ে রাজ্যজুড়ে হয় বিক্ষোভ। শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ফের জালিকাট্টু চালুর ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার।
কানাগারাসু বলেন, ‘আমার বাবা ও দাদা দুজনেই ষাঁড় লালন-পালন করতেন। এগুলো তারা নিজের সন্তাদের মতো দেখতেন।’
পারিবারের ঐতিহ্য অনুসারে এই দায়িত্ব পড়ার কথা কানাগারাসুর ভাইদের ওপর। কিন্তু ষাঁড় লালন-পালনের সময় নেই তাদের। তাই একাজে এগিয়ে আসতে হয়েছে এই নারীকে।
যে ষাঁড়টি তিনি পুষে রাখে, সেটির নাম রামু। বয়স ১৮। স্থানীয় জালিকাট্টু খেলোয়াড়দের মাঝে সে একটি লিজেন্ড। এ পর্যন্ত পাঁচবার পদক জিতেছে ষাঁড়টি।
কানাগারাসু বলেন, ‘রামু আমার একটি ছেলে। সে পুরস্কার জিতেছে, কিন্তু আরো গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সে গ্রামে আমার পরিবারের জন্য সম্মান নিয়ে এসেছে।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন