দোকলামে নির্মাণকাজ ‘বৈধ’ দাবি করে চীন শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বলেছে, তার নিজের ভূখণ্ডে তার সৈন্য ও জনগণের জীবনমানের উন্নতি করার লক্ষ্যেই এসব কাজ করা হচ্ছে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাঙ বলেন, সীমান্তে টহল দেওয়া এবং সীমান্ত সৈন্য ও অধিবাসীদের উৎপাদন ও জীবনযাত্রা উন্নয়ত করার জন্য দঙলঙ (দোকলাম) এলাকায় রাস্তা এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করেছে চীন।
ভারত সীমান্তের দোকলামে চীন একটি বিশালাকার সামরিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর চীনের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি দেয়া হলো। ওই এলাকায় চীনা সামরিক কমপ্লেক্সের উপগ্রহ ছবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে লু ক্যাঙ বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনের কথাও উল্লেখ করেছি। আমি জানি না, কারা এসব ছবি তুলেছে।’
তিনি ওই এলাকার ওপর চীনা দাবির কথাটি আবারো জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দঙলঙ প্রশ্নে চীনা অবস্থান স্পষ্ট। দঙলঙ সবসময়ই চীনে এবং সবসময় চীনের কার্যকর নিয়ন্ত্রণেই ছিলো। এ নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। উল্লেখ্য, ওই এলাকাটি ভুটানও দাবি করে।
তিনি বলেন, চীন তার ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব প্রদর্শন করছে। এটি বৈধ ও যৌক্তিক। ভারতীয় ভূখণ্ডে ভারতের অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে তো চীন কখনো মন্তব্য করে না। আমরা আশা করব, চীনের ভূখণ্ডে চীনের অবকাঠামো নির্মাণ নিয়েও অন্য কোনো দেশ কোনো মন্তব্য করবে না।
দোকলামে দ্বিতীয় অচলাবস্থা নিয়ে চীন প্রস্তুত কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের চিকেন নেক করিডোরের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করার জন্য ভারতীয় সৈন্যরা হস্তক্ষেপ করলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মারাত্মক পরীক্ষার মুখে পড়েছিল।
সিকিম সীমান্তের কাছে দোকলামে ভারতীয় ও চীনা সৈন্যরা গত বছর প্রায় আড়াই মাস মুখোমুখি অবস্থায় ছিল। পরে ২৮ আগস্ট দুই পক্ষ সৈন্য ‘প্রত্যাহার’ করে নিলে উত্তেজনার প্রশমন ঘটে।
দৃশ্যত চীন ও ভুটানের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকাটি নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের মন্তব্যটির দিকে ইঙ্গিত করে লু বলেন, ভারতের সিনিয়র সামরিক অফিসার স্বীকার করেছেন, ভারতীয় সৈন্যরাই সীমান্ত অতিক্রম করেছিল।
তিনি বলেন, ওই ঘটনা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মারাত্মক পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছিল। আমরা আশা করি, ভারতীয় পক্ষ এ ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং পুনরাবৃত্তি এড়িয়ে যাবে।
দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৮ জানুয়ারি জানায়, গত বছর দোকলাম অঞ্চলে সৃষ্ট মুখোমুখি পরিস্থিতির অবসান হয়েছিল ভারত ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে। এতে উভয় পক্ষই তাদের সৈন্য প্রত্যহার করতে সম্মত হয়েছিল। পরদিন মন্ত্রণালয় আবার জানায়, তারা দোকলাম পরিস্থিতির ওপর ‘সার্বক্ষণিক নজর’ রাখছে।
এতে আরো বলা হয়, দোকলাম প্রশ্নে স্থিতিবস্থার পরিবর্তন ঘটেনি। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, স্থিতিবস্থা নষ্ট হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন