আরব-ইসরায়েল’ কথাটি সামনে এলেই যেন মনে হয় চিরবৈরী দুই অঞ্চলের কথা। আরবদের ভূখণ্ড দখল করে ব্রিটিশদের ছত্রছায়ায় ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, অপরদিকে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটিকে উৎখাতের জন্য আরব দেশগুলোর একাধিক লড়াই- সব মিলিয়ে আরব-ইসরায়েল মানেই শত্রু শত্রু খেলা।
কিন্তু নতুন বাস্তবতা ভিন্ন। এখন ‘আরব-ইসরায়েল’ শব্দ দুটো যেন এক ধরনের মিত্রতার আভাস দেয়। সর্বশেষ বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনের পর। ‘সিক্রেট অ্যালায়েন্স: ইসরায়েল ক্যারিস আউট এয়ার স্ট্রাইকস ইন ইজিপ্ট, উইদ কায়রোস ওকে’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে আরব-ইসরায়েল গোপন সামরিক সম্পর্কের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অচিহ্নিত ইসরায়েলি ড্রোন, হেলিকপ্টার ও জেটবিমান গোপন হামলা চালিয়েছে। মিসরের অভ্যন্তরে শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে তারা। সপ্তাহে একাধিক হামলা চালানো হয়েছে। আর এ সবই করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির অনুমতি সাপেক্ষে।’
যদিও ১৯৭৯ সাল থেকেই মিসরের সঙ্গে শান্তিচুক্তি আছে ইসরায়েলের। তবে এখন পর্যন্ত বিমান হামলা তো দূরের কথা, কোনো ধরনের সহায়তার কথা কোনো দেশ থেকেই স্বীকার করা হয়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটির মূলে ছিল সিনাই উপত্যকা। সেখানে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে মিসরীয় সরকার। আর ওই লড়াইয়ে সহায়তা পেতেই ইসরায়েলের দ্বারস্থ দেশটির প্রেসিডেন্ট সিসি। এতে কে, কতটা লাভবান হবে- নিয়ে নানা বিচার বিশ্লেষণ রয়েছে গবেষকদের মধ্যে। কেউ কেউ মনে করেন, এ ধরনের হামলায় ইসরায়েলের সুবিধা হচ্ছে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ঠিক রাখা।
এখন পর্যন্ত অবশ্য এই সংবাদ পশ্চিমা ও ইসরায়েলি সূত্রেই জানা গেছে। মিসরীয় গণমাধ্যমগুলো (সরকার নিয়ন্ত্রিত) একে ‘অপেশাদার সাংবাদিকতা’ ও ‘ভুয়া সংবাদ’ বলে আখ্যা দিয়ে আসছে। এই সামরিক সহায়তার খবরটি সঠিক হলে তা হবে, মিসরীয় কর্তৃপক্ষের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
এদিকে উপসাগরীয় অঞ্চলে নজর দিলে দেখা যাবে, ইরানের আঞ্চলিক ভূমিকা দিন দিনই বেড়ে চলেছে। পারস্য উপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত ইরানের এই ভূমিকায় ভয়ে থাকে সৌদি আরব, মিসর ও জর্দানের মতো দেশগুলো।
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে আরব দেশগুলো চাইছে ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে। ইরান ও তার পারমাণবিক ‘উচ্চাভিলাসের’ ব্যাপারে সমানভাবে আতঙ্কিত উপসাগরীয় দেশগুলো। অনেকেই মনে করছেন, ইরানের কাছে প্রকৃতই উপাদান আছে।
সম্প্রতি সৌদিভিত্তিক সংগঠন মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগের মহাসচিব ড. মোহাম্মদ আল ইসা ওয়াশিংটনে হলোকাস্ট মেমোরিয়াল জাদুঘরে লেখা এক খোলা চিঠিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হলোকাস্টে নিহতদের প্রতি তার সমবেদনা জানান ও যারা বলে ‘হলোকাস্ট বলে কিছু হয়নি’ তাদের নিন্দা জানান।
সৌদি আরবের এই জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতার পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি ইসরায়েলকে কাছে টানার একটি কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন