যুক্তরাষ্ট্রে বাংলা সংবাদপত্রের পাঠক চাহিদা এবং বিজ্ঞাপন বাজার যাচাই না করে হরদম পত্রিকা প্রকাশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় শীর্ষস্থানীয় ১০টি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদকরা।
তারা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকা সাপ্তাহিক হিসেবে স্থানীয়ভাবে প্রকাশের ফলে কমিউনিটিতে অশুভ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কে বিজ্ঞাপনের সীমিত বাজারে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ওপরও বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের বেলাজিনো পার্টি হলে মালিক-সম্পাদকদের তৃতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেন সাপ্তাহিক ঠিকানার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমএম শাহীন, সাপ্তাহিক বাঙালি সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক আজকালের প্রধান সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ জিকো, সাপ্তাহিক বর্ণমালা সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ।
সাপ্তাহিক দেশবাংলা ও বাংলা টাইমসের প্রধান সম্পাদক ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেও সবার সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক পত্রিকার মালিক-সম্পাদকরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলা সংবাদপত্রের পাঠক চাহিদা এবং বিজ্ঞাপন বাজার যাচাই না করে বিশেষ উদ্দেশ্যে রাতারাতি পত্রিকা প্রকাশের অশুভ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের বিত্তবান ব্যবসায়ী মহলের মালিকানাধীন দৈনিক পত্রিকার সাপ্তাহিক সংস্করণ যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ এবং এ ধরনের আরও কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে এমন সংবাদে কমিউনিটিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপনের সীমিত বাজারে ব্যবসায়ীদের ওপর বাড়তি চাপ ছাড়াও বিব্রতবোধ করছেন তারা।
পক্ষান্তরে দীর্ঘ তিন দশক ধরে কমিউনিটির কল্যাণ ও উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ সংবাদপত্রগুলোকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে অসম ও অশুভ প্রতিযোগিতার। এ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিউইয়র্কের শীর্ষ স্থানীয় ১০টি পত্রিকার মালিক/সম্পাদক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সম্পাদকবৃন্দ বলেন, আমেরিকার বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির ক্রমবিকাশ এবং আজকের এ অবস্থান সৃষ্টির নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বাংলা সংবাদপত্রগুলো। বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আরও শক্তিশালী ও মর্যাদাবান করার লক্ষ্যে পত্রিকাগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।
প্রবাসীদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা, তাদের সুখ-দুঃখ, কৃতিত্ব এবং বাংলাদেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক উন্নয়ন, নতুন প্রজন্মের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য গাথা তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলা ভাষার পত্রিকাগুলো কমিউনিটিতে তথ্য প্রবাহের ক্ষেত্রে ভিন্ন মাত্রা সংযোজন করেছে।
সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি স্থানীয় মিডিয়া জগতে সুস্থ ও নির্মল প্রতিবেশ গড়ে তোলার ব্যাপারে সবার সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সম্পাদকগণ। এ লক্ষ্যে অচিরেই সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা বিষয়ের ওপর কমিউনিটিভিত্তিক একটি সেমিনার আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠকে পত্রিকা প্রকাশ, বিতরণ ও বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সম্পাদকদের পরবর্তী বৈঠক মার্চের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন