মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তোর আশপাশে বিভিন্ন স্থানে তিনটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি বলে দেশটির পুলিশ এএফপিকে জানিয়েছে।
শনিবার নাম না প্রকাশের শর্তে পুলিশের একজন উচ্চ কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, স্থানীয় সময় ভোর চারটার দিকে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আরও তিনটি বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তা সামান্য আহত হয়েছেন।
বোমা তিনটির মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয় রাজ্য সরকারের এক সচিবের বাড়ির প্রাঙ্গণে। অন্য দুটির একটি অফিসের সামনে এবং সমুদ্রের সৈকতে যাওয়ার প্রধান পথে বিস্ফোরিত হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জ জ এএফপিকে ফোনে জানায়, বোমা বিস্ফোরণের পর পুলিশ কিছু রাস্তায় চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
গত বুধবারও মায়ানমারের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর ডেশিওতে একটি ব্যাংকে বোমা বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটে। এতে দুই ব্যাংক কর্মী নিহত ও ১১ জন আহত হয়।
মায়ানমারের রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে গত আগস্টে তল্লাশিচৌকিতে হামলার পর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা দলে দলে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে। জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, এ দফায় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই রোহিঙ্গাদের প্রায় সবাই অভিযোগ করেছে, মায়ানমারের সেনারা রাখাইনে অভিযানের নামে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে।
জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এ অভিযানকে জাতিগত নির্মূল বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে মায়ানমার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
চেকপোস্টে হামলার দায়ে মায়ানমারে চার রোহিঙ্গার মৃত্যুদণ্ড
পুলিশ চেকপোস্টে হামলার দায়ে চার রোহিঙ্গাকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছে মায়ানমারের একটি আদালত।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, শুক্রবার দুপুরে রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার একটি বিশেষ আদালত এ রায় ঘোষণা করে।
দন্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবর এনগো খোরা পুলিশ চেকপোস্টে হামলা চালায় তারা। এতে নিহত হয় দুই নিরাপত্তা রক্ষী। একই মামলায়, ১০ থেকে ২০ বছর করে, বিভিন্ন মেয়াদে আরো ২৬ রোহিঙ্গাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছে ১৫ জন।
রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা মায়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে, এমন অভিযোগ এনে, ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযানে চালানো হয়। এতে নিহত হয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা, আর বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৯ লাখেরও বেশী মানুষ।
গত বছর আগস্ট মাসের শেষ দিকে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে। কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে এসব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশ সরকারের হিসেব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৯ লাখেরও বেশি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন