অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে ভারতকে হুঁশিয়ারি জানিয়েছে ভারত মহাসাগরীয় ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। খবর এএফপি।
সম্প্রতি মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট নিয়ে নিয়মিত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে ভারত। বুধবার ভারত থেকে জানানো হয়, দেশটিতে জরুরি অবস্থা প্রলম্বিত করার ঘোষণায় তারা ‘গভীরভাবে পীড়িত’ হয়েছে। ভারতের মন্তব্যের জবাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মালদ্বীপ।
ভারতের একসময়ের খুব ঘনিষ্ঠ মিত্র মালদ্বীপে রাজনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন দেশটির প্রধান বিচারপতি, উচ্চ আদালতের অন্য এক বিচারপতিসহ প্রায় সব বিরোধীদলীয় নেতাকে আটকের নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রেসিডেন্টের সৎ ভাই মামুন আবদুল গাইয়ুমকেও আটক করা হয়েছে।
মালদ্বীপের চলমান সংকটকে ‘গণতন্ত্রের ওপর সর্বাত্মক হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান। নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশীদ ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করে। তবে ভারত সরকার এ আহ্বানে কোনো সাড়া দেয়নি।
চাবাহারের পাশে পাকিস্তানকে সামরিক ঘাঁটি করে দেয়ার ঘোষণা চীনের
সম্প্রতি ট্রাম্পের টুইটের পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধু রাষ্ট্র চীনের সাথে ঘনিষ্টতা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ওমান উপসাগরের ইরানের চাবাহার বন্দরের কাছাকাছি পাকিস্তানকে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে দেয়া ঘোষণা দিয়েছে চীন। শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শতকোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই বন্দরটি মূলত পাকিস্তানকে পাশ কাটিয়ে আফগানিস্তানের ভূ-খণ্ড ব্যবহার করে আমদানি রফতানির কাজে ব্যবহার করে ভারত। গেল বছর ডিসেম্বরেই বন্দরটি উদ্বোধন করা হয়। বন্দরটি নির্মাণ ব্যয়ে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জুগিয়েছে ভারত। ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরের পাশে পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথেরই বহিঃপ্রকাশ।
সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের দ্বন্দ্ব গেল কয়েক বছর ধরে প্রকাশ্য। বেশ কয়েকবার সীমান্তে মহড়া দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। ‘শত্রুর শত্রু বন্ধু’- নীতিতে দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র পাকিস্তান-চীন। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটার বার্তার প্রেক্ষাপটে বেইজিং ও ইসলামাবাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক বন্ধন আরো সুদৃঢ় করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন দুই দেশের সরকার প্রধান।
গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জানুয়ারির ১ তারিখের টুইটারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, ‘সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দানের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হচ্ছে পাকিস্তান।’ এতে পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইসলামাবাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনের জন্য চীনের মুদ্রাকে অনুমোদন দেয়ায় ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে’ চীন আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এতে করে সামরিক ও বাণিজ্যিক খাতে চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ট হবে।
ওয়াশিংটন টাইমসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, চীন তার কৌশলগত সামুদ্রিক পরিবহনে উপকূলবর্তী ক্ষমতা আরও সুসংহত করার জন্য দ্বিতীয় বিদেশী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
চীন তার প্রথম বৈদেশিক সামরিক ঘাঁটি তৈরি করে ভারত মাহাসাগরে অবস্থিত আফ্রিকার জিবুতিতে। যদিও চীন কর্মকর্তারা প্রকাশ করে যে, এটি শুধু জলদস্যুদের নিধনের জন্য নৌ কর্মীদের নিয়ে গঠিত তাদের একটি সামরিক ঘাঁটি। জিবুতির পাশাপাশি শ্রীলংকার হাম্বানটোটা বন্দরও ৯৯ বছরের জন্য ইজারা নিয়েছে চীন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন