নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজে কোনো যান্ত্রিক খুঁজে ত্রুটি পায়নি এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি। রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কার্যালয়ের সামনে এয়ারক্রাফট এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশের (এএআইজি-বিডি) প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য রওনা দেয়ার আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এরপর বেলা ১১টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন নেপাল যান।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজের কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি খুঁজে পাইনি। উড্ডয়নের আগে তাদের সকল যন্ত্রাংশ ঠিক ছিল। এখন পর্যন্ত যতটুকু আমরা দেখেছি বা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তাহলো ত্রান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়নি।’
ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বেবিচক গঠিত ৬ সদস্যের কমিটির প্রধান হিসেবে আমি নেপাল যাচ্ছি। প্রয়োজন অনুসারে বাকি পাঁচ সদস্যও নেপাল যাবেন।’
এ সময় তিনি আইকা গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য বলেও জানান।
তদন্তের প্রসঙ্গ নিয়ে ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ফ্লাইট উড্ডয়ন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কোথায় সমস্যা ছিল, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’
ব্লাকবক্সের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ব্লাকবক্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা এখন পর্যন্ত খোলা হয়নি, নেপালেই রয়েছে। ব্লাকবক্স কোথায় নিলে ভালো হয়, সেটি নেপালে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আমাদের মানুষের প্রাণ গেছে। এজন্য অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। আইকার তদন্তও আমরা খেয়াল রাখব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নেপালের এটিসি বা ইউএস-বাংলা কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। আমরা তদন্ত এমনভাবে করতে চাই, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। প্রকৃত কারণটাই খুঁজে বের করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তের জন্য তাড়াহুড়ো করলে হবে না। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’
এ সময় ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন বাংলাদেশ কিংবা নেপাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে না জেনে নেতিবাচক খবর প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ৭১ আরোহী নিয়ে গত ১২ মার্চ দুপুরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-২১১ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়।
এতে বিমানের ৫১ আরোহী নিহত হন। উড়োজাহাজে চার ক্রুসহ ৩৬ বাংলাদেশি ছিলেন। এদের ২৬ জনই নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার পর্যন্ত ২৮ লাশ সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে ১০ জন নেপালি ও একজন চীনের নাগরিক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন