নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার যৌথ তদন্ত শুরু হচ্ছে আজ।দুর্ঘটনা তদন্তে ১৩ মার্চ ওই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়, কিন্তু সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করছে আজ।
১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হলে ৪৯ জন মানুষ নিহত হন। এর মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশী।
তদন্ত দলে নেপাল, বাংলাদেশ, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন, সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ। তিনি বাংলাদেশ বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত দল বা এয়ারক্রাফট এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশের প্রধান।
তদন্তের আগেই দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি দুর্ঘটনার পরপরই ককপিট এবং কন্ট্রোলরুম এটিসির মধ্যকার কথোপকথন ফাঁস হয়ে যায়।
সামাজিক নেটওয়ার্কে তা নিয়ে চলেছে নানান আলোচনা।
বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিমান সংস্থা এবং নেপালের কর্মকর্তারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপও করেছিলেন।
তবে সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত আলোচিত সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হবে তদন্তে। মূল ফোকাস থাকবে ব্ল্যাক বক্সের তথ্য এবং ককপিট ও কন্ট্রোল টাওয়ারের মধ্যকার কথোপকথন যাচাই করে দেখা। কারণ ব্ল্যাক বক্সের তথ্য যাচাই করলেই বেশির ভাগ প্রশ্নের জবাব মিলবে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ব্ল্যাক বক্সের তথ্য যাচাই করার জন্য কানাডা বা সিঙ্গাপুরে নেয়া হতে পারে।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিমানের মেইনটেনেন্স বা রক্ষণাবেক্ষণ কেমন ছিল এবং দুর্ঘটনার দিনের আবহাওয়া কেমন ছিল তা দেখা হবে।
একই সাথে পাইলটের শারীরিক, মানসিক এবং পেশাগত তথ্য যাচাইসহ সব ধরণের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করা হবে।
তিনি বলেছেন, আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে এই তদন্ত কমিটিকে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে ।
তবে, ঠিক কী কারণে এবং কোনো পরিস্থিতিতে বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছিল, কবে নাগাদ তা উদঘাটন করা যাবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বলতে পারেননি তিনি।
তবে, সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ জানিয়েছেন, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন আইকাও এর নিয়ম অনুযায়ী ৩৬৫ দিনের মধ্যে এ ধরনের তদন্ত শেষ করতে হয়। যদিও বিশেষ প্রয়োজনে সময় বাড়ানোর কথা বলা আছে নীতিমালায়।
তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে ইউএস বাংলার বিমান, পাইলট ও কো-পাইলট সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে।
সব তথ্য এবং কাগজপত্র নিয়ে সকালের ফ্লাইটে বাংলাদেশে থেকে রওনা হয়েছেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ।
তিনি জানিয়েছেন, পাইলটের লগবুক, পাইলট লাইসেন্স, কো-পাইলটের ফ্লাইংয়ের অনুমতির তথ্য চেয়েছে নেপাল।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিমানটি কবে কেনা হয়েছে, এবং এর মেরামত সংক্রান্ত তথ্যও চেয়েছে তদন্ত।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন