কথায় কথায় তিনি পরমাণু হামলার হুমকি দেন। উত্তর কেরিয়ার শাসক সেই কিম জং উনের গলাতেই কি না এবার উল্টো সুর। গোপনে চীন সফরে গিয়ে তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠক তো করলেনই, সঙ্গে জানিয়ে দিলেন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।কিম যে চীন যাচ্ছেন, তা কাক-পক্ষীতেও টের পায়নি। গোটা সফরটাই ছিল রহস্যে মোড়া। এমনকী সফর শেষ করে যতক্ষণ না কিম দেশে ফিরেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত চীনও এই সফর নিয়ে মুখ খোলেনি।
বুধবার সকালে বেইজিংয়ের তরফ থেকে কিমের সফরের কথা সরকারিভাবে জানানো হয়।উত্তর কোরিয়ায় শাসক ক্ষমতায় বসার পর এটাই কিমের প্রথম বিদেশ সফর। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী রি সোল জু।চীন যে কিমের সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটা রাজকীয় অভ্যর্থনার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিমের সম্মানে বিশেষ ভোজের ব্যবস্থা করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।চীনের সরকারি সূত্র বলছে, দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে ইতিহাস বিজড়িত বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলসে। আলোচনার বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে অবশ্য কিছু বলা হয়নি।
তবে বেজিংয়ের দাবি, পরামাণু নিরস্ত্রীকরণে কিম যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেটা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, বৈঠকে যত না বলেছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি মনোযোগ দিয়ে কিম শুনেছেন চীনা প্রেসিডেন্টের কথা।কিন্তু প্রশ্ন হলো, আচমকা কেন চীন সফরে কিম?দেশে ফিরে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থাকে কিম জানিয়েছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চীনের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। সেই সম্পর্কের খাতিরেই প্রথম বিদেশ সফরের জন্য চীনকেই বেছে নিয়েছি।’
যদিও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা বিষয়টাকে এত সরল বলে মনে করছেন না। এমনিতেই সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই কমিউনিস্ট দেশের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল। তার ওপর আগামী মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের বৈঠকের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে।চীনের আশঙ্কা, সেই বৈঠক সফল হলে কিম হয়ত চীনের থেকে আরও দূরে সরে যাবেন। মনে করা হচ্ছে, রাজকীয় আতিথেয়তা দিয়ে হয়ত কিমকে কাছে টানার বার্তাই দিয়ে রাখল চীন।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন