অ্যালেক মিনাসিয়ানের বয়স ২৫ বছর। টরেন্টোর উত্তরের শহরতলি রিচমন্ড হিলের অধিবাসী তিনি। অন্য কোনো অপরাধে এর আগে পুলিশের খাতায় কখনও তার নাম ওঠেনি।
কিন্তু মাত্র একদিন আগে টরেন্টো শহরের একটি ব্যস্ত রাস্তার ধারে পথচারীদের ওপরে গাড়ি উঠিয়ে দেন তিনি। এ ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন আরও ১৬ জন।
কানাডার পুলিশ বলেছে, ওই যুবক হামলার ঠিক আগে অনলাইনে রহস্যজনক কিছু বার্তা পোস্ট করেন।
যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নারীবিদ্বেষী ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অপর এক হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তির প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছেন।
পেশাজীবীদের যোগাযোগের মাধ্যম লিঙ্কডইনে খোলা তার প্রোফাইলে লেখা আছে, তিনি সেনেকা কলেজের ছাত্র। ঘটনাস্থলের বেশ কাছেই অবস্থিত এ কলেজটি। গুগলে একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য একটি গাড়ি পার্কিং অ্যাপ রয়েছে, যার প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক মিনাসিয়ান একই ব্যক্তি কিনা সেটিও পরিষ্কার নয়।
তবে তার সহপাঠীরা জানিয়েছেন, তিনি কম্পিউটারে খুব পারদর্শী। তার একজন সহপাঠী তাকে সামাজিকভাবে বিদঘুটে প্রকৃতির বলে বর্ণনা করেন।
তবে কোনো উগ্রপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী বলে তাকে মনে হয়নি বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সহপাঠী। স্কুলে তার সাবেক সহপাঠীরা জানিয়েছে, তিনি কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না।
স্কুলে তিনি বিশেষ সহায়তা দরকার এমন তালিকাভুক্ত ছিলেন। স্কুলে একা একা হেঁটে বেড়াতেন এবং ক্যাফেতেও একা বসেই খেতেন। কিন্তু তিনি সহিংস ছিলেন না বলে সহপাঠীরা জানান। কেন তিনি হঠাৎ করে রাস্তার ধারে মানুষজনকে এভাবে গাড়ি দিয়ে হামলা চালালেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে তিনি দুর্ঘটনাবশত নয়, বরং ইচ্ছে করেই যে কাজটি করেছেন সেটি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি এমন কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার কাছে ২২ বছর বয়সী এক তরুণের গুলিতে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনাটি নিয়ে অনলাইনে আলাপ করেছেন অ্যালেক মিনাসিয়ান।
পুরনো ফেসবুক পোস্টে তাকে বলা হয়েছে, 'ইনভলান্টারি সেলিবেট' যারা অনিচ্ছাকৃতভাবে বিয়ে অথবা অন্য কোনো ধরনের যৌনসম্পর্ক ত্যাগ করেছেন।
তবে এর কোনো কিছুই অবশ্য এখনও প্রমাণিত নয়। ক্যালিফোর্নিয়ার ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী যুবক এলিয়েট রজার্স লিখে গিয়েছিলেন, তিনি মেয়েদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে একাকী জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছেন।
রজার্স ওই হামলার সময় নিজেও আত্মহত্যা করেন।
এসবের সঙ্গে মিনাসিয়ানের সম্পর্ক থাকতে পারে। অর্থাৎ তিনিও প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই এ হামলা চালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবার এগুলো কোনো ধরনের মিথ্যা প্রচার কিনা সেটি নিয়েও স্থানীয় গণমাধ্যমে আলাপ হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন