ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামোফোবিয়ার মধ্যেকার সামান্য পার্থক্যে বিমোহিত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ম্যাক্রোঁ এটি স্বীকার করেছেন।
৪০ বছর বয়সী ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বৃহত্তর অর্থে, আমাদের সংস্কৃতিতে মুসলমানদের কলঙ্ক এবং তাদের বর্জনের জন্য অনুরূপ আবেগ প্রকাশ করে। তবে, স্পষ্টতই সেখানে কয়েকটি সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সে আমাদের মূলধারার রাজনৈতিক বক্তব্যে ইসলামফোবিয়াকে স্বাভাবিক করতে আমরা হয়তো সামান্য ভাল কাজ করেছি। অবশ্যই আমি কঠোর হতে চাই না। আমরা উভয়েই (ফ্রান্স ও আমেরিকা) এখনো মুসলিমদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের মত আচরণ করি। যাইহোক, আমাদের ঘৃণ্য বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতার প্রবণতা জিহ্বা থেকে খুব সহজে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে, আমেরিকানদের প্রবণতা আরো সংবেদনহীনভাবে মুসলিম বিশ্বাসের প্রতিটি সদস্যকে স্পষ্টভাবে অবজ্ঞা করে থাকে।’
আলোচনায় মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জন বোল্টন ইরানে বোমা মারার হুমকি দিলে ম্যাক্রোঁ মুচকি হাসি দিয়ে তা উপভোগ করেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকরা নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র: দ্য অনিওন ডটকম
আরো পড়ুন..
ট্রাম্প সম্ভবত পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবেন: ম্যাকরন
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন তিনদিনের যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবেন। সফরের শেষ পর্যায়ে বুধবার জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ম্যাকরন বলেন, তিনি জানেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট কি সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে অভ্যন্তরীণ কিছু কারণে ট্রাম্প সম্ভবত এ সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, ট্রাম্প উত্তেজনা বৃদ্ধির যে নীতি নিয়েছেন তারই অংশ হিসেবে সম্ভবত তিনি পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেবেন। ম্যাকরন আরো বলেন, ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী মানুষ এবং তিনি এমন একটি সমঝোতা চান যা তার স্বার্থ রক্ষা করবে।
ট্রাম্প ২০১৭ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ইরানের সঙ্গে তার দেশসহ ছয় পশ্চিমা দেশের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা বাতিল বা যুক্তরাষ্ট্রকে এ সমঝোতা থেকে বের করে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন। ২০১৫ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে এ সমঝোতায় স্বাক্ষর করে ওয়াশিংটন।
সমঝোতাটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে ইরানের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রেখে প্রতি চারমাস পরপর একটি প্রজ্ঞাপনে সই করে আসছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগামী ১২ মে ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের পরবর্তী তারিখ। কিন্তু ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন ওই তারিখের মধ্যে ইরানের পরমাণু সমঝোতায় তার ইচ্ছেমতো পরিবর্তন আনা সম্ভব না হলে তিনি ওই প্রজ্ঞাপনে সই করবেন না এবং আমেরিকাকে এ সমঝোতা থেকে বের করে নেবেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মঙ্গলবার দেশের উত্তরাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরে এক জনসভায় বলেছেন, ট্রাম্প যদি পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যান তাহলে তাতে আমেরিকার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে এবং ইরান সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ ছাড়া, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলে ইরানও খুব সম্ভবত এটি ত্যাগ করবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন