ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে ইসরাইলি বসতি স্থাপন এবং দেশটির বিরুদ্ধে ওঠা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্তের জন্য ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আহ্বান সাড়া দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
মঙ্গলবার নেদারল্যান্ড ভিত্তিক আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদা বলেন, ‘২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে প্যালেস্টাইনের পরিস্থিতি একটি প্রাথমিক পরীক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি তদন্তের মানদণ্ড পূরণ করেছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রাথমিক পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখা হচ্ছে এবং আইসিসি তার স্বাভাবিক গতি অব্যাহতভাবে অনুসরণকরবে।’
বেনসুডা জানান, তার সংস্থা স্বাধীনভাবে প্রাপ্ত সমস্ত তথ্য যথাযথভাবে মূল্যায়ন এবং বিশ্লেষণ করে।
গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের অপরাধ বিষয়ে সংস্থাটি তদন্ত করে থাকে।
গত সোমবার ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে গাজায় কমপক্ষে ৫৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের উপর ইসরাইলি বাহিনী গুলি চালায়।
গুলিতে আহত হয়েছে আরো দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজা-ইসরাইল সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইসরাইল। কিন্তু ইউরোপসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
তেলআবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনিরা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছে। আজ যখন আর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তখন ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এতো ব্যাপক রক্তপাতের ঘটনা ঘটলো।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকে ইসরাইল পূর্ব জেরুসালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেম তারা গড়ে তুলেছে দু'লাখ ইহুদির জন্যে বহু বসতি। আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ।
একসময় জেরুজালেম বহু দেশের দূতাবাস ছিলো। কিন্তু ১৯৮০ সালে ইসরাইল জেরুসালেমকে রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করার পর বহু দেশ সেখান থেকে তাদের দূতাবাস সরিয়ে নেয়। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সূত্র: আনাদুলো এজেন্সি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন