আগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে লড়াইয়ের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া শুরু করেছেন দেশটির রাজনীতিকরা। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তাদেরকে দেখাতে হচ্ছে সম্পদের হিসাব।
ইতিমধ্যে অনেক নেতাই তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, তার বাবা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও ইমরান খানের সম্পদ নিয়ে।
প্রদর্শিত সম্পদের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এসব রাজনীতিক। রাজার মতো অতি বিলাসী জীবনযাপন করেন তারা।
মরিয়ম নওয়াজের সম্পদ : মরিয়ম নওয়াজ তার সম্পদের হিসাবে দেখিয়েছেন মোট ৮৪ কোটি ৫০ লাখ রুপির সম্পদ। পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানায় বিনিয়োগ শেয়ার রয়েছে তার।
চৌধুরী সুগার মিল লিমিটেড, হামজা স্পিনিং মিলস, মোহাম্মদ বকশ টেক্সটাইলস মিলস লিমিটেড, হুদাইবিয়া পেপার মিলস ও হুদাইবিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের অংশীদারি মালিকানায় বিনিয়োগ রয়েছে। রয়েছে প্রায় ২ হাজার একর কৃষিজমি।
গত তিন বছরে বিদেশ ভ্রমণে ৬৪ লাখ রুপি খরচ করেছেন বলে হিসাবে উল্লেখ করেছেন তিনি। বাবা নওয়াজ শরিফ রাজনীতিতে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার পর পরিবারের রাজনীতির হাল ধরেছেন তিনি। নির্বাচনে লাহোরের এনএ-১২৫, এনএ-১২৭ ও পিপি-১৭৩ এই তিনটি আসন থেকে লড়বেন মরিয়ম।
বিলিয়ন রুপির মালিক বিলাওয়াল : সম্পদের পরিমাণে বিলাওয়ালকে একজন ধনকুবের বলা যায়। পাকিস্তানে ও পাকিস্তানের বাইরে তার রয়েছে দুই ডজনের বেশি অস্থাবর সম্পত্তি।
এ ছাড়া দুবাই ও যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। এসব দেশেও কয়েকটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে তার। দুবাইয়ে রয়েছে দুটি বাড়ি- একটি উপহার হিসেবে পাওয়া, অন্যটি পৈতৃক সূত্রে।
বিলাওয়ালের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউজ জানিয়েছে, ১৫০ কোটি রুপির সম্পদ রয়েছে বিলাওয়ালের। তার ব্যাংক হিসাবে রয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ রুপি।
আরেক ধনকুবের আসিফ আলি জারদারি : বিলাওয়ালের বাবা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। প্রদর্শিত হিসাবে মোট ৭৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬০ হাজার রুপির সম্পদ উল্লেখ করেছেন তিনি।
এর মধ্যে রয়েছে ৬টি বুলেটপ্রুফ বিলাসবহুল গাড়ি। তিনটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, দুটো বিএমডব্লিউ ও একটা টয়োটা লেক্সাস। পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে তার রয়েছে ৭ হাজার ৪০০ একর কৃষিজমি।
এ ছাড়া দুবাইয়ে রয়েছে অস্থাবর সম্পত্তি। রয়েছে অস্ত্রের মজুদ, ঘোড়া ও গবাদি পশুর খামার। গবাদি পশুর মূল্য ধরা হয়েছে ৯৯ লাখ রুপি। অস্ত্র ও গোলাবারুদের মূল্য ১ কোটি ৬৬ লাখ রুপি।
ল্যান্ড মার্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন ১ কোটি ২৯ লাখ রুপি। বিভিন্ন ব্যাংকে ২০ কোটি ৯০ লাখ রুপি নগদ অর্থ আছে বলে দেখিয়েছেন তিনি।
ইমরান খানের সম্পদের হিসাব : মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার রুপির সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান।
জিও টিভির প্রতিবেদনমতে, কৃষি, বেতন, পেনশন ও ব্যাংক থেকে পাওয়া মুনাফাকে আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন। বেতনের অর্থ ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও কৃষি থেকে আয় ২৩ লাখ ৬০ হাজার রুপি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মোট ২৮ বার বিদেশ সফরে গিয়েছেন তিনি। এর বেশিরভাগই দলীয় ভর্তুকিতে বলে দাবি করেছেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন