তুরস্কের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে শনিবার বিশাল সমাবেশ করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররেম ইনস। সমাবেশে দুই নেতাই একে অপরকে আক্রমণ করে বক্তৃতা করেন।
তুরস্কে আজ রবিবার প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় বছর আগেই এই নির্বাচন আহ্বান করেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
এরদোগান আশা করছেন তিনি এই নির্বাচনে প্রথম রাউন্ডেই জয় লাভ করবেন এবং পার্লামেন্টে প্রত্যাশিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবেন।
কিন্তু রিপাবলিকান পিপলস পার্টিতে (সিএইচপি) ইনসের উত্থান এবং ব্যাপক-ভিত্তিক বিরোধী জোট নির্বাচনে এরদোগানের জয়কে অনেকটা কঠিন করে তুলেছে।
গত দুই দিনে ইজমির ও আঙ্কারাতে বিশাল শো ডাউন শেষে শনিবার ইস্তাম্বুলের এশীয় অংশের মাল্টেপ উপকূলের কাছে চূড়ান্ত সমাবেশ করেন। ইনস দাবি করেছেন, ইস্তাম্বুলের ওই সমাবেশে পাঁচ লাখ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
‘ভিন্ন তুরস্ক’
ইনন জনসভায় জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি এরদোগান নির্বাচনে জয়লাভ করেন, তবে তুর্কি মুদ্রা দুর্বল থেকে যাবে, দ্রব্যমূল্যের উচ্চ হার বৃদ্ধি পারে এবং ৩.৫ মিলিয়ন সিরিয়ান শরণার্থীদের বিষয়টি অমিমাংসিত থেকে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু যদি ইনস জিতে, তবে তা কেবল ইনসের জয় হবে না। এটি হবে ৮০ মিলিয়ন জনগণের জয়! জয় হবে তুরস্কের।’
গত ৫০ দিনে তিনি ১০৭টি সমাবেশ করেছেন। তিনি ভোট প্রক্রিয়া পরিষ্কারভাবে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত থাকার জন্য সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল আমাদের একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন তুরস্ক থাকবে। আগামীকাল সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে।’
তার এই সমাবেশটি অত্যন্ত উৎসবমূখর ছিল। ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশের অনেক সমর্থক মারমারা সাগর পাড়ি দিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন।
সেনেট শাহিন নামে ইনসের একজন সমর্থক বলেন, ‘আমরা মানবাধিকার, আইন এবং ন্যায়বিচার সমর্থন করছি। আমি ইনসকে সমর্থন তিনি কারণ তিনি সৎ এবং মানবিক।’
প্রচারের শেষ দিনে ইস্তানবুলে সমাবেশ করেছেন এরদোগানও।
‘প্রেসিডেন্টের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন’
ইস্তাম্বুলের একটি সমাবেশে এরদোগান বলেন, ‘আল্লাহ চাইলে আগামীকাল (রবিবার) সন্ধ্যায় আমরা একত্রে এই অভিজ্ঞতার উদযাপন করতে সক্ষম হবো।’
এসময় তিনি জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনারা কি বড় বিজয়ের প্রস্তুত?’
সুষ্ঠুভাবে ভোটগণনা নিশ্চিত করতে রবিবার তুর্কি নির্বাচন কমিশনের সদরদপ্তরে ক্যাম্প স্থাপনের জন্য প্রতিজ্ঞা করেছেন বিরোধী নেতা ইনস। তার এই প্রতিজ্ঞার সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, ‘মুহাররেম আপনাকে বলছি, আমরা একটি আইনি রাষ্ট্রে বসবাস করছি। ভোটের নিরাপত্তার জন্য সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
সাবেক পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক ১৬ বছর ধরে এমপি পদে থাকলেও রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের কোনো সংস্থা পরিচালনার অভিজ্ঞতা তার নেই।
এ সম্পর্কে এরদোগান বলেন, ‘পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষক হওয়া আর রাষ্ট্র পরিচালনা করা এক জিনিস নয়। প্রেসিডেন্টের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। একজন প্রেসিডেন্টের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি প্রয়োজন রয়েছে।’
সূত্র: এএফপি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন