অবৈধ বসবাসকারীদের সঙ্গে আমরা কোনো আপস করবে না এবং অবৈধ শ্রমিক নিয়োগ দাতাদের কোনো ছাড় দিবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন এর মহাপরিচালক দাতুক শ্রী মোস্তফা আলী। তিনি বলেন, আমরা শুধু অবৈধ শ্রমিকদের দোষ দিবো না , কারন নিয়োগ দাতাদের জন্য শ্রমিকরা আজ অবৈধ।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন ,আমরা জানি অবৈধ শ্রমিকরা বর্তমান কোথায় অবস্থান করছে (গহিন জঙ্গলে ও ব্রিজের নিচে) । আমরা সব সময়ই খবর রাখি। আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে আত্মসমর্পণ ( ৩+১ ) এর আওতায় যদি অবৈধ শ্রমিকরা দেশত্যাগ না করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে । শুধু অবৈধ শ্রমিকে নয় বরং আমরা তাদের নিয়োগ দাতাদের ও গ্রেফতার করবো । অবৈধ শ্রমিক এবং নিয়োগ দাতাদের সঙ্গে কোনো আপস করব না ।
তিনি আরো বলেন, জানুয়ারি ২০১৭ থেকে ৩০ জুন ২০১৮ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা আত্মসমর্পণ (৩+১ ) এর আওতায় ১ লক্ষ ৩ হাজার ৫শত ৭৪ জন দেশে ফিরে গেছেন । আমরা অবৈধ শ্রমিক এবং নিয়োগ দাতাদের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে বলেছি , যার যার দুতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস ইস্যু করে দেশে যাওয়ার জন্য । যদি এই নির্দেশ মানতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আমরা, এবং কোন প্রকারেই আপস করা হবে না । আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে সবাইকে ।
এদিকে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের ব্যাপক ধরপাকড় অভিযানের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার একজন এমপি। গত কয়েক দিন আগে মালয়েশিয়ার ঐ এমপি বলেন , বর্তমান অভিবাসন বিভাগ শ্রমিকদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করছে যা বর্তমান সরকারের (পাকাতান হারাপান ) মানানসই নয়। এদিকে চলমান মেগা থ্রির অভিযানে ইতোমধ্যই প্রায় তিন হাজার শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে । বাংলাদেশের আছেন প্রায় এক হাজারের মতো। এছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৫ জন নিয়োগ কারীকে।
এদিকে চলমান অভিযানে অধিকাংশ নিয়োগকারীরা তাদের অবৈধ শ্রমিকদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে (৩+১) বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের যার যার দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ।
অনেক নিয়োগকারী এই প্রতিবেদককে জানান , বিগত দিনে শুধু শ্রমিকদের গ্রেফতার করা হতো কিন্তু বর্তমানে নিয়োগকারীকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে যার কারণে আমরা অবৈধ শ্রমিকদের যার যার দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছি । এ সমস্যা দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে । তাই আমরা আর কোন রিস্ক নিতে চাই না ।
এ ব্যাপারে কথা হয় একজন ট্রাভেল এজেন্ট মালিকের সঙ্গে, তিনি জানান বর্তমানে প্রতিদিন আমাদের ট্রাভেল এজেন্ট থেকে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ জন শুধু যাওয়ার টিকিট কেটে যাচ্ছে যা বিগত দিনে ছিল না । অন্যদিকে অভিবাসন বিভাগের অভিযানে বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা বর্তমােেন জঙ্গলে আস্থায়ী ঘর বানিয়ে শুকনা খাবার নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছে। আবার অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না
এ ব্যাপারে কথা হয় মালয়েশিয়ায় বিবাহি মুদি ব্যবসায়ী বাংলাদেশি আলীর সঙ্গে। পাহাং জেলার কুয়ান্তান শহরের আলী এই প্রতিবেদককে জানান , বিগত দিনে প্রতিদিন আমার দোকানে ২ থেকে ৩ হাজার মালাই রিংগিত ( ৪০হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা) বিক্রয় হইত বাংলাদেশি মালামাল । বর্তমানে অভিবাসন বিভাগের অভিযানে গ্রেফতার আতঙ্কে কোনো খরিদ্দার ই আসেনা । কোন রকম ১০০ থেকে ২০০ মালাই রিংগিত (টাকা ২০০০ থেকে ৪০০ টাকা) বিক্রয় হয়। বর্তমানে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশিদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ভিডিও করে তা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে ইমিগ্রেশন বিভাগের অভিযানে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ওই দোকানগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে ।
শীর্ষ নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন