মহাখালীর কাঁচাবাজারে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে বাজার করতে আসেন রকিব ও মুছা। একটি সফটওয়ার ফার্মে কাজ করা এই দুজন প্রথমেই মিনিকেট চাল কিনতে যান। চাল ভেদে মিনিকেটের দাম ৬৫ ও ৭০ টাকা চান দোকানদার।
দাম শুনেই মুছার মন্তব্য, ‘কঠিন অবস্থা!’ পরে তিনি ৪৮ টাকা দরের পাঁচ কেজি মোটা চাল কেনেন। রাকিবও তা-ই করেন।
রকিব প্রিয়.কমকে বলেন, ‘এতো টাকা দিয়ে চাল কেনা যায়? তাই মাঝারি মানের একটা কিনেছি।’
মহাখালীর কাঁচাবাজারের এক দোকানদার জানান, তিনি নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি করেছেন ৬৫ টাকায়, পায়জাম ৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহে বিক্রি করেছেন ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায়, আটাশ ৫৫ টাকায় যা গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়, নাজের ৬৫ টাকায় যা গত সপ্তাহে করেছেন ৫০ থেকে ৬২ টাকায়।
গুলশান এক নম্বরের ডিসিসি কাঁচাবাজারে মিনিকেট প্রতি কেজি ৬৩ থেকে ৬৭ টাকা, ফার্মগেটের খুচরা দোকানে মিনিকেট ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বাড্ডায় ৬৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও চালের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, আড়তদাররা গত এক সপ্তাহে মোটা চাল কেজি প্রতি এক টাকা, আর চিকন চাল দুই টাকা বাড়িয়েছে। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা বাড়িয়েছে মোটা-চিকন নির্বিশেষে ৩ থেকে ১০ টাকা।
ভোক্তাদের অভিযোগ, এমনিতেই চালের দাম বাড়তি, এর মধ্যে আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
চালের আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, নতুন ধান না আসা পর্যন্ত চালের দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ ইতোমধ্যে আড়তগুলোতে চালের মজুদ কমতে শুরু করেছে। অন্যদিকে ভারত থেকেও চাল কম আমদানি হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে যদি ভারত থেকে চাল আসে তবে দাম কিছুটা কমতে পারে। না আসলে আরও বাড়বে।
চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কথা হয় কারওয়ান বাজারের মেসার্স বিসমিল্লাহ রাইস এজেন্সির মালিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বস্তা প্রতি মোটা জাতের চালগুলো প্রায় ৫০ টাকা আর চিকন চালগুলো প্রায় ১০০ টাকা করে বাড়ছে।’
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের আড়তদাররাও চালের দাম বাড়তির একই চিত্র তুলে ধরেন।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কাওরান বাজারে রয়েছে চালের আড়ত। আড়তদাররা মোটামুটি কাছাকাছি দামেই চাল বিক্রি করেন। কাওরান বাজার মেসার্স বিসমিল্লাহ রাইস এজেন্সি মিনিকেট প্রতি কেজি ৫৯/৬০ টাকা, আটাশ ৪৫/৪৮/৫৩ টাকা, পায়জম ৪২/৪৫ টাকা, গুটি মোটা ৪২, পোলাও ৮০/৮৫ এবং নাজিরশাইল ৬০/৬২ টাকা বিক্রি করছে।
কাওরান বাজারের একটি চালের আড়তে দামের তালিকা। ছবি: প্রিয়.কম
কৃষি মার্কেটের এস বি ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক আশিক জানান, তারা দেশি আটাশ ৪৮ থেকে ৫০, ভারতীয় আটাশ ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়, মিনিকেট দেশি ৫৯ থেকে ৬১, ভারতীয় মিনিকেট ৫৬ থেকে ৫৭ টাকায়, পায়জাম দেশি ৪১ থেকে ৪২ টাকায়, ভারতীয় পায়জাম ৩৯ থেকে ৪০ টাকায় এবং নাজিরশাইল দেশি ৫৮ থেকে ৬৫ টাকায়, ভারতীয় ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন।
আশিক বলেন, ‘আমদানি ওইরকম নাই। দেশি চালও শেষ প্রায়। এ জন্যই চালের দাম বাড়তির পথে।’
আড়তদাররা যে দামে চাল বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা তার চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। তবে পোলাওয়ের চালের দাম বাড়েনি।
প্রিয়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন