হঠাৎ বাজারে ছোলার দাম বেড়ে গেছে। বাজার ভেদে বৃদ্ধির পরিমাণ ৫ থেকে ১০ টাকা। তবে মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ তারা জানে না। সরকারের তথ্য অনুযায়ী যথেষ্ট মজুদ আছে, মূল্য বৃদ্ধির কারণে নেই। অন্যদিকে আমদানি পরিস্থিতি নাজুক রেখে মজুদদাররা ইচ্ছা করে মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করছে আমদানি সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকাররা।
রাজধানীর মিরপুর-১০ ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি ভালো মানের ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে বাজার ভেদে ৮৫ টাকা। তূলনামূলক খারাপ মানের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। রোজা শুরু থেকে ৪ দিন পর্যন্ত এ ছোলা ৫ থেকে ১০ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছে। এ বিষয়ে মিরপুরের খুচরা বিক্রেতা নুরুল ইসলাম জানান, পাইকারি বাজারে ছোলার ক্রাইসেস। এ কারণে ছোলার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সেগুনবাগিচা ও ফার্মগেটের রাজাবাজারে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা দামে ছোলা বিক্রি হতে দেখা গেছে। তুলনামূলক খারাপ মানের ছোলা বিক্রি হতে দেখা গেছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। রাজাবাজারের সোলাইমান হোসেন জানান, আগের দামেই ছোলা বিক্রি হচ্ছে। আমরা আগেই প্রয়োজনীয় ছোলা এনে রেখেছি। আগের দামেই বিক্রি করছি। তবে রোজা শুরু হওয়ার চার/পাঁচদিন আগে ছোলার একটু ঘাটতি ছিল। তখনই ছোলার দাম একটু বেড়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বছরে ছোলার চাহিদা ১ লাখ টনের। চাহিদার ৬০ শতাংশ তৈরি হয় রমজান মাসে। চাহিদার বিপরীতে দেশে উৎপাদন হয় ১০ থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল ১০ মাসে ছোলা ও ছোলার ডাল আমদানি হয়েছে ৬৪ হাজার ৩৫৪ মেট্রিক টন। ঋণপত্র খোলা হয়েছিল-নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আরও প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন। আগের বছরে ব্যবহারের পর প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন মজুদ ছিল বলে জানায় পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী সুত্র। ফলে কোনভাবেই ছোলার দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছোলা আমদানি হয়েছে ৫.০৮ লাখ টন। পুরো বছরের চাহিদা মেটানোর পর ছোলার উদ্বৃত্ত থাকে ৪.৬৩ লাখ টন। এর সঙ্গে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ১.৯৮ লাখ টন। কিন্তু এ তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় রাখা নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনায় তিনি বলেন, এ বছর রমজান মাসে ছোলা ও ডালের বাজারে কোনো ধরনের সংকট থাকবে না। যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, তার বেশি এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের কাছে মজুদ রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন