ঈদকে সামনে রেখে বাড়ল মাংসের দাম। সেই সঙ্গে পুরো রমজানে স্বাভাবিক থাকলেও বেড়েছে দর পোলাওয়ের চালের।
ঈদে মাংস আর পোলাওয়ের চালের বাড়তি চাহিদা থাকে। উচ্চ আর মধ্যবিত্ত তো বটেই, নিম্ন আয়ের মানুষরাও মুখরোচক খাবার তৈরি করে। আর এই অতিরিক্ত চাহিদা প্রতি বছরই দাম বাড়ায়।
রোজায় মাংসের যে দাম নির্ধারণ করা হয়, সেটি কার্যকর থাকে ২৬ রোজা পর্যন্ত। আর রোজায় বেঁধে দেয়া দামই যেখানে মানা হয়নি, সেখানে নির্ধারিত মূল্যসীমা উঠে যাওয়ার পর কী হবে, সেটা বলাই বাহুল্য।
ঈদ করতে রাজধানীর মানুষকের একটি বড় অংশ এখন গ্রাম বা মফস্বলের নিজ এলাকায় অথবা পথে রয়েছে। নগর অনেকটাই ফাঁকা। কিন্তু বাজারগুলো পণ্যে ভরপুর। এই অবস্থায় চালের দাম কেন বাড়বে, সে বিষয়ে প্রশ্ন আছে ক্রেতাদের।
মাংস বিক্রেতার দাবি, প্রতি বছর ২৭ রমজানে গরু-খাসির মাংসের দাম বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সুপার শপে যে মাংস ২৬ রোজার আগে ৪৫০ টাকা ছিল, সেটি এখন ৫১০ করে বিক্রির জন্য এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। আর বাজারে যে মাংস কেজিতে ৫০০ করে বিক্রি হয়েছে, সেটিতেও নূন্যতম ৫০ টাকা বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা।
মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজারের মাংস বিক্রেতা মোতালেব ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতি বছর দাম বাড়ে। শেষ দিকে দাম তো একটু বাড়বই। সারা বছর কি গরুর মাংস সাড়ে চাইরশোতে বেচুম?’
সপ্তাহ খানেক ধরেই বেড়েছে মুরগির মাংসের দাম। মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজারের জনতা ব্রয়লার বিক্রেতা শাহিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আগে ১৬০-১৬৫ ছিল এহন ১৭৫ টাকা। দাম আরও বাড়তে পারে। চান রাতে ১৮৫-১৯০ টাকাও হইতে পারে।’
বাজারের দৈনিক মূল্য তালিকায় ব্রয়লার মুরগির যৌক্তিক দাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৫৫-১৬১ টাকা। কিন্তু ‘পদ্মা ব্রয়লার হাউজ’ এ নেয়া হচ্ছে কেজিতে ১৪ টাকা বেশি। একই চিত্র আশপাশের সব দোকানে। বিষয়টি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা নেই বাজার কমিটির।
বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী মতিউর রহমান মিয়া চাঁদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি এখন বাজারে নাই। আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। আমি আপনাকে পরে জানাব।’
দেশি ও পাকিস্তানি নামে পরিচিত সোনালী মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
একই বাজারের ক্রেতা আহসান উল্লাহ্ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অতিরিক্ত টাকা দিয়ে জিনিস আমাদের কিনতে হয়। বাড়তি টাকা দিতে কেমন লাগে সেটা আমরা জানি। কিন্তু এগুলো বলবো কাকে? আর বলেও লাভটা কি? ঈদের আগে সব জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’
‘মাছ, মাংস, সবজি যা কিনতে যান, দাম বেশি। ঈদের কাপড় কিনতে গেলে দাম বেশি।’
আরেক ক্রেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘এভাবে দাম বাড়াটা অযৌক্তিক। ঈদে অনেক লোক ঢাকা ছেড়ে যায়, যারা থাকে দোকানদাররা তাদেরই গলা কাটে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ঈদের আগেও রাখা দরকার। এতে আমরা যেমন উপকৃত হয়, তেমনি ব্যবসায়ীরাও প্রতারণার সুযোগ কম পায়।’
দোকানিদের তথ্য বলছে, দাম বাড়ার সিদ্ধান্ত সম্মিলিত ভাবেই নেয়া হয়। স্থানীয় ব্রয়লার মুরগি ব্যবসায়ীদের সমন্বিত সিদ্ধান্তেই দাম নির্ধারণ করা হয়। আর এ বিষয়ে অবগত বাজার কমিটিও।
বিক্রেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলছেন, আড়তে দাম বেশি। বেশি টাকায় কিনে আনতে হয় বলে, বিক্রি মূল্যও বেড়েছে।
একই অবস্থা পোলাওয়ের চালে। প্যাকেটজাত পোলাওয়ের চালে না বাড়লেও খোলা চালের দাম বেড়েছে। চিনিগুড়া পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগেও কেজিতে দুই-চার টাকা কম ছিল দামে।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন