পরীমনি মডেল ও অভিনেত্রী। ভালোবাসা সীমাহীন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়।রানা প্লাজা ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল রোম্যান্টিক আরো ভালোবাসবো তোমায়, লোককাহিনী নির্ভর মহুয়া সুন্দরী, এবং অ্যাকশনধর্মী রক্ত।
পরীমনি সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহন করেন। জন্মকালে নাম রাখা হয় শামসুন্নাহার স্মৃতি। ছোটবেলায় মা সালমা সুলতানাকে হারানোর পর পরীমনি বড় হয়েছেন পিরোজপুরে নানা শামসুল হক গাজীর কাছে।
আট বছর আগে বাবা মনিরুল ইসলামকে হারিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। মা যখন মারা যান, তখন তাঁর বয়স তিন বছরের কম। নানা-নানির কাছেই মানুষ হয়েছেন এই অভিনেত্রী। ছোটবেলায় মা-বাবার আদরও তিনি তাঁদের কাছ থেকেই পেয়েছেন।
বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে লেখা একটি ফেসবুকে স্ট্যাটাসে পরী জানান, তাঁর জন্মদাতা বাবা মনিরুল ইসলাম হলেও আসল বাবার দায়িত্ব পালন করেছেন নানা শামসুল হক গাজী। নিজের বাবার সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে আজ পৃথিবীর সব বাবাকে শুভকামনা জানিয়েছেন পরীমনি।
বাবা দিবসে ফেসবুকে পরীমনি লিখেছেন, ‘তুমি কি বাবা! নাহ তোমাকে কিছু লিখবো না আমি আজ।
লিখবো তোমাকে নিয়ে...
হ্যালো ফেসবুক দুনিয়া, শোন কতই তো বাবা দিবস গেল
আমি শুধু দেখেই গেছি সবার বাবা দিবসের কত কত পোস্ট...
এবার আমিও দিলাম। দেয়ার একটা কারণ ছিল। কারনটা স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম একবার। আজ লিখতে গেলে আবার মেজাজটা সামলাতে পারব না হয়তো।
যা-ই হোক, ছবিটাতে আমি আমার বাবা মনিরুল ইসলামের সাথে।
বাবা বেঁচে নেই আজ ৮ বছর হয়ে যাচ্ছে...
বাবা পুলিশ ছিলেন। বাবার শরীরে পুলিশের পোশাক দেখে আমার ছোট্ট বেলার লক্ষ্য ছিল পুলিশ হবার।
মা মরে যায় তখন আমি ৩ বছরেরও কম ছিলাম। বাবা এই ধাক্কাটা নিতে পারছিলেন না বলে দেশ ছাড়েন।
বাবার ছায়া করে পাই নানুভাইকে।
নানু নানি দুজনই টিচার। নানু বাড়ী আর দাদু বাড়ি দুবাড়িরই বড় নাতনি। অনেক আহ্লাদে বড় হওয়া আমার। কখনো এক বিন্দু অনুভব করিনি মা-বাবার শূন্যতা। ভুল করেও মনে পড়েনি কখনো। এমনকি এখন ভাবি আসলে মা বাবা কী জিনিস!
আজ সত্যি যদি বলি আমার বাবা হলেন আমার নানুভাই শামসুল হক গাজী।
আর আমার জন্মদাতা বাবা হলেন মনিরুল ইসলাম।
ওহ একটা মজার বিষয় বলি, অনেকেরই আমার নাম নিয়ে কৌতূহল দেখেছি। আসল নাম, ডাকনাম, কে রেখেছে ইত্যাদি ইত্যাদি...
নাম কখনো আসল নকল হয় নাকি? হাহাহাহা...হতে পারে ডাক নাম অথবা সার্টিফিকেট নাম।
আমার পরী নামটা আমার নানিমনির দেয়া। তার নানির নাম ছিল পরীবিবি। আমার জন্মের কিছুদিন আগে তার নানি মারা যান আর আমার জন্মের পর আমার নাম পরী হয়ে যায় আর মনিটা সবাই আদর করেই চালু করে দিল আমার সার্টিফিকেট নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি।
শামসুন মানে সূর্যের আলো। নানুভাইয়ের নামের সাথে মিল করে এই নাম।
আর ‘স্মৃতি’টা বাবা জীবনের প্রথমবার হজ করতে গিয়ে ঠিক করেছিলেন, আল্লাহর কাছে মেয়ে চেয়ে। যদিও বাবা তখন নাকি বিয়েই করেননি, এসব বাবার কাছে শোনা আমার।
বাবা মরে যাবার পর আমার স্মৃতি নামটা কেবল স্মৃতিই হয়ে গেল। সবাই বলে মেয়েরা নাকি বাবার স্বভাবী বেশি হয় একটু। আমিও নাকি আমার বাবার মতো বদ মেজাজি, অনেক বেশি আবেগপ্রবণ, স্পটভাষী, প্রচণ্ড সাহস এসব পেয়েছি। বাবার সঙ্গে আমার অনেক বেশি স্মৃতি নেই।
বড় হওয়ার পর বাবাকে কাছে পেয়েছিলাম এক বছরের মতো। মনে আছে যেদিন বাবা দেশে ফিরে প্রথম আমার সামনে আসে.... একটা ছোট্ট বাচ্চার মতো শব্দ করে সেকি কান্না!
কতো যে রাত পোহাতো বাবা মেয়ের। শুধু আমার ছোট্ট বেলার যতো গল্প কাহিনি...একদিন বাবার একটা সাদা রঙের শার্ট আমাকে দিয়ে খুলতে বলল। খুলে দেখি শার্টের ভেতর আঁকা বাঁকা হাতে শুধু বাবা...বাবা...লেখা...
দেখেই বোঝা যাচ্ছিল হাতের লেখাটা একটা বাচ্চা হাতের।
বাবা বুকের মধ্যে আমাকে ধরে চুপ করে ছিল। অনেক্ষণ পরে বলল ‘জানো এখানে ২৭৩ বার বাবা লেখা আছে। তুমি কেবল লিখতে শুরু করেছিলে তখন। কলম হাতে দেওয়ার পর যেখানেই সুযোগ পেতে সেখানেই ছোট্ট করে বাবা শব্দটা লিখতে।
ওহ আমি তো ভুলেই গেছিলাম যে আমি ফেসবুকে লিখছি।
সরি আসলে বাবা নিয়ে লেখার সীমারেখাটা আমার জানা নেই হয়তো
থাক আর না লিখি আজ।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা।’
পরীমনির জন্ম ১৯৯২ হলেন একজন বাংলাদেশী মডেল ও অভিনেত্রী। ভালোবাসা সীমাহীন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়।রানা প্লাজা ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল রোম্যান্টিক আরো ভালোবাসবো তোমায়, লোককাহিনী নির্ভর মহুয়া সুন্দরী, এবং অ্যাকশনধর্মী রক্ত।
পরীমনি সাতক্ষীরা জেলায় ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহন করেন। জন্মকালে নাম রাখা হয় শামসুন্নাহার স্মৃতি। ছোটবেলায় মা সালমা সুলতানাকে হারানোর পর পরীমনি বড় হয়েছেন পিরোজপুরে নানা শামসুল হক গাজীর কাছে, এসএসসি পর্যন্ত বরিশালেই পড়াশোনা করেছেন।
সেখান থেকেই তিনি তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করেন। বর্তমানে সাতক্ষীরা সরকারী কলেজে বাংলা বিভাগে সন্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ২০১১ সালে ঢাকায় চলে আসেন এবং বাফায় নাচ শিখেন।
পরীমনি মডেলিং এর মাধ্যমে তার কর্ম জীবন শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন নৃত্যানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং টিভি নাটকে অভিনয় করেন। তিনি মডেলিং থেকে ছোটপর্দায় এবং তারপর রূপালী পর্দায় অভিনয় শুরু করেন পরীমনি।
অভিনয় জীবন শুরু করেন টিভি নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে। তিনি সেকেন্ড ইনিংস, এক্সক্লুসিভ, এক্সট্রা ব্যাচেলর, নারী ও নবনীতা তোমার জন্য এ চারটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন। এর মধ্যে জাকারিয়া সৌখিন রচিত নারী ও নবনীতা তোমার জন্য নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন পরীমনি।
এতে চিত্রনায়ক আমিন খান, চিত্রনায়িকা পপি এবং ঈশানাও অভিনয় করেছিলেন। প্রথম অভিনীত নাটকেই তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন এবং চম্পার সাথে অভিনয় করেন।
মুক্তির আগেই ২৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে রীতিমত হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন পরী মনি। ছবি মুক্তির আগেই মিডিয়ায় নানা ধরনের খবরের জন্ম দিয়ে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি। শাহ আলম মন্ডল পরিচালিত ভালোবাসা সীমাহীন তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র।
কিন্তু তিনি আলোচনায় আসেন নজরুল ইসলাম খানের রানা প্লাজা চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকে। পরবর্তীতে ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত পাগলা দিওয়ানা ও দরদিয়া, এস এ হক অলীকের আরো ভালোবাসবো তোমায় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হল মনজুড়ে তুই, ইনোসেন্ট লাভ, লাভার নাম্বার ওয়ান, নগর মাস্তান, মহুয়া সুন্দরী। ২০১৬ সালে মুক্তি পায় মন জানে না মনের ঠিকানা, ও পুড়ে যায় মন। ২০১৭ সালে মুক্তি পায় কত স্বপ্ন কত আশা, আপন মানুষ, ও শফিক হাসানের ধূমকেতু। এছাড়া আর রয়েছে শামীমুল ইসলামের আমার প্রেম আমার প্রিয়া, গিয়াসউদ্দিন সেলিমের স্বপ্ন জাল, মালেক আফসারীর অন্তর জ্বালা, ওয়াজেদ আলী সুমনের অ্যাকশনধর্মী রক্ত, দেবাশীষ বিশ্বাসের মন জ্বলে এবং সৈকত নাসিরের পাষাণ, নদীর বুকে চাঁদ, সোনা বন্ধু, এবং বুকের মাঝে প্রেমের আগুন।
তাছাড়া জনপ্রিয় হবার পর পরীমণি বেশ কয়েকটি টিভি বিঙ্গাপনে অভিনয় করেছেন (লাক্স, স্যান্ডেলিনা, ওয়াল্টন ইত্যাদি) ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন