নাচের রুমঝুম শব্দের ভেতর একজীবন পার করে দিলেন লায়লা হাসান। এখনও সক্রিয় নাচ ও নানাবিধ কাজে। কেমন সেই গল্প? সে সবই বলেছেন পরিবর্তন ডটকমকে...
.
আপনি জীবনের ৭১ বসন্তে পদার্পণ করলেন। এ উপলক্ষে আপনাকে নিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘ছন্দে জীবনানন্দে ৭১-এ পা’। এ নিয়ে বলুন?
আমার খুবই ভালো লাগছে। এটা জীবনের বড় একটি পাওয়া। আমাকে ভালোবেসে পরিশ্রম করে, পয়সা খরচ করে কিছু মানুষ অনুষ্ঠানটা করছে, আমি খুবই খুশি। কৃতজ্ঞ। মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান পাওয়া সবার ভাগ্যে থাকে না। যদিও আমার বেশ আপত্তি ছিল। এমননিতে শুভেচ্ছা জানালেই হতো। সেটা ঠিক হতো। এখন সময়টা বেশ অস্থির। দেশে নানারকম মন্দ সময় যাচ্ছে। রোহিঙ্গা নিয়ে, বন্যায় মানুষ কষ্ট পেয়েছে। এমন সময়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হোক আমি চাইনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আজ (শনিবার) অনুষ্ঠানটি করছে তারা।
অনুষ্ঠানে কারা থাকছেন?
কামাল লোহানীর নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি হবে শিল্পকলায়। শিবলী মোহম্মদ থাকবে, শামীম আরা নিপা থাকবে। আরও অনেকে থাকবেন। আমাকে আয়োজকরা সবকিছু আগে থেকে বলেনি। চমক রাখতে চায় হয়তো।
আপনি নাচ নিয়ে একজীবন কাজ করে গেলেন। বিটিভিতে ‘রুমঝুম’ অনুষ্ঠান করতেন আশির দশকে...
নাচের অনুষ্ঠান আমি এখনও করছি। বিটিভিতে নাচের অনুষ্ঠানটা করি। রুমঝুম। খুব ছোটবেলা থেকেই আমি নাচ করি। আবৃত্তি করি। পরিবারে একটা ভালো পরিবেশ ছিল। সহযোগিতা পেয়েছি। উৎসাহ পেয়েছি। এখন যেমন দেশে বিদেশে নাচ শেখা যায়, স্কলারশিপ নিয়ে শেখার সুযোগ আছে, তখন ততটা ছিল না। কিন্তু প্রেরণা বা সুযোগটা পেয়েছি। সমস্যা হয়নি। নাচ নিয়ে নানা অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি জমা হয়েছে। ভালোলাগে যে, আমাদের ছেলেমেয়েরা ভারতে, আমেরিকা বা বাইরে গিয়েও নাচ শিখছে। ভালো করছে।
আপনি মঞ্চে ও টিভিতে বহু অনুষ্ঠান করেছেন- অভিনয় ও নাচ নিয়ে। একটি স্মরণীয় কাজের কথা বলুন?
দুটো কাজের কথা খুব মনে পড়ে। আমার জীবনের স্মরণীয় কাজ মনে করি। একটি রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’ নাটক আর একটি বিদেশি নাটকের বাংলা অনুবাদ। নাট্যরূপ দিয়েছিলেন আমাদের প্রিয় মানুষ মুনীর চৌধুরী। স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে আমরা দুজনে কাজ করেছিলাম- হাসান ও আমি।
এই মুহূর্তে কী কাজ করছেন?
এখন বেশ কিছু কাজ করছি। কদিন আগে নবান্নর উৎসব করলাম। রোহিঙ্গাদের নিয়ে এটা কাজ করছি- মা হওয়ার পর তাদের সামাজিক সমস্যা নিয়ে। এখন জরিপের কাজ চলছে। আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মেম্বার ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছি। মহিলা সমিতির সঙ্গে যুক্ত আছি, সেখানে ১০টি ‘না’ নিয়ে কাজ করছি। বাল্যবিবাহে না, ধর্ষণে না, যৌতুকে না- এরকম ১০টি ‘না’ বিষয়ে পরিকল্পনা ও জরিপের কাজ চলছে। খেলাঘরের নানা কাজের সঙ্গে আছি।
একজন লায়লা হাসানকে মানুষ আলাদাভাবে চেনে, জানে ও পছন্দ করে, এটা ভেবে কেমন অনুভূতি হয়?
আমার খুবই ভালো লাগে। অনেক টাকা হলো, গাড়ি-বাড়ি হলো, কিন্তু সম্মানটা পেলাম না- সেই রকম জীবন আসলে আমি চাইনি। আমি আনন্দ পাই, যখন কোথাও যাই, মানুষ কাছে আসে, কথা বলে। ছুঁয়ে দেখতে চায়। মানুষের এই ভালোবাসা ও অনুরাগ আমার খুব ভালো লাগে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন