কাজটি অত্যন্ত কঠিন বলা যে, সমাজে অবক্ষয়, নাকি অপসংস্কৃতির প্রভাব, অথবা নারী পুরুষভেদে মারাত্মকভাবে ‘ইগো’ প্রব্লেম। হা, আত্ম অহমিকা বন্ধনকে নাজুক করে দেয় এটা সত্যি কিন্তু আধুনিকতা এবং উচ্চ শিক্ষার হার যে হতে পারে তা বড় বড় পত্রিকায় আসছে শিরোনাম হয়ে। আজকের আধুনিক এবং দ্রুতগতির জীবনে সম্পর্কের বিচ্ছেদ রাষ্ট্রীয় কোন নতুন সমস্যা হয়ে দাড়িয়ে পড়বে কিনা বলা মুশকিল। কেন এই সম্পর্ক গুল ভালবেসে গড়েও ভেঙ্গে পড়ছে?
আসুন দেখি কিছু পয়েন্ট:
১) সেক্সচুয়াল সমস্যা
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং এক নম্বর সমস্যা হল সেক্সচুয়াল সমস্যা। লোকলজ্জা অথবা অজানা জ্ঞান এব ভুল শিক্ষার জন্য একটি সুমধুর দাম্পত্য জীবন সূচনা লগ্নে অন্ধকার ছায়াতলে ডুবে যেতে পারে। এজন্য সুস্থ যৌন মিলন একটি অপরিহার্য অঙ্গ। যখন স্বামী-স্ত্রী পরিতৃপ্ত যৌন মিলনে ব্যর্থ হয় তখন তাদের মাঝে দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরিশেষে ঘুমের ঘর থেকেই দাম্পত্য জীবন সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়।
২) সম্পর্কের অবনতি
দাম্পত্য জীবনে মতবিরোধ ও মনোমালিন্য থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে তাকে বেশী বাড়তে দেয়া যাবে না। তা যদি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, কেউ কারো সাথে কথা বলছে না তাহলে সমস্যা জটিলতর হয়ে ক্রমান্বয়ে তা বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।
৩) নির্যাতন
নির্যাতন তিন প্রকার, কখন শারীরিক, বস মানসিক, সেক্সচুয়াল। যা একটি সম্পর্ককে হত্যা করে। এ ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় বিপদ জনক কারণ হল, দৈহিক ভাবে অত্যাচার, মার-পিট ও রুক্ষ আচরণ অথবা মানসিকভাবে নির্যাতন তথা অপমান, হেয় প্রতিপন্ন, গালাগালি করা। বৈবাহিক বন্ধনে সেক্সচুয়াল নির্যাতন ভয়ংকর রূপে হলেও সমাজে হয়ে অনেক নারী বা পুরুষ নিরবে চুপ থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন যুদ্ধ শেষে সম্পর্ক মরে যায়।
৪) দাম্পত্য জীবনে অনীহা
দাম্পত্য জীবনের ব্যাপারে বিতৃষ্ণা একটি জীবনে এক ঘেয়েমী ও বিরক্ত ছড়িয়ে দেয়। এটি সংসার ভাঙ্গার একটি কারণ। দীর্ঘ দিন ঘর সংসার করার পর যদি দেখা যায়, ভালোবাসার উষ্ণতা শীতল হয়ে পড়েছে। পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছে। তাহলে পরিণতিতে তা তালাকের দিকে গড়ায়। দীর্ঘদিন গোপন প্রেম, তারপর গোপন বিয়ে, এক সময় সবকিছু ফাঁস। দাম্পত্য জীবনের প্রতি অনীহার জন্ম নেয়।
৫) মাদকাসক্তি
মাদকাসক্তি ব্যক্তির নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়, রাগ বেড়ে যায়, সন্দেহ জন্ম নেয়, এমনি প্রচন্ড অত্যাচারী হিসেবে পরস্পর এর প্রতি সহিংস্র হয়ে পরে। দাম্পত্য জীবনকে ধ্বংসের অতল তলে নিয়ে যায়। এর ধ্বংসাত্তক দিক অনেক। ফলে.. প্রচুর অর্থ অপচয়, অপর পক্ষের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন, শারীরিক নির্যাতন, সন্দেহ জনক অবৈধ সম্পর্ক আর পরিশেষে দাম্পত্যে জীবন ধ্বংস ‘তালাক’।
৬) বিয়ের পর অবৈধ সম্পর্ক
স্বামী অথবা স্ত্রীর পক্ষ থেকে যে কেউ যদি পরকীয়ায় লিপ্ত থাকে তাহলে পরবর্তীতে তা বৈবাহিক জীবনের ইতি টানতে বাধ্য করে। তা জীবনে একটি মারাত্মক হুমকি হয়ে দাড়িয়ে যায়। পরকীয়া মূলত: দাম্পত্য জীবনে বিশ্বাস ঘাতকতার শামিল।
আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি দম্পতিকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করে তাদেরকে একটি সুস্থ, সুন্দর, মধুময়, ও বরকতময় পরিবার গঠন করার তাওফীক দান করুন। এ জন্য পারষ্পারিক ভালোবাসার উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা প্রত্যেক জরুরী। রেফারেন্স: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব। সুখী ও সুন্দর পরিবার গঠন করবো।
ফাতেমা শাহরিন
মনোবিজ্ঞান
অপরাজিতা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন