কেন হাল আমলের বলিউড তারকাদের অনেকেই তাদের কন্যাদের বলিউডে আসতে দিতে চান না। এ নিয়ে রয়েছে নানা রকম জল্পনা কল্পনা। অনেক আগে একটা খবর মিডিয়াতে রটেছিল, আলোচিত বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত তাঁর কন্যার পা ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিলন। কারণ তাঁর কন্যা বলিউডে অভিনেত্রী হিসেবে নিজের নাম লেখানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। এই খবর নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও সিনেমা শিল্পের ভেতরে খোঁজ খবর যারা রাখেন তাঁরা অবশ্যই খুশিই হয়েছিলেন। কারণ এতে করে বলিউডের ভেতরের আসল চিত্রটার একটা আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছিল। এই সততার জন্য অনেকে সুপারস্টার সঞ্জয় দত্তের বেশ প্রসংশাও করেন। চলচিত্র তাত্ত্বিক শুভাস কে ঝা সম্প্রতি উইঅন এর এক লেখায় এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
সঞ্জয় দত্তের সাহসিকতার প্রশংসা করে লেখক মন্তব্য করেছেন, আসলেই ভারতীয় উঠতি নায়িকাদের কিসের ভেতর দিয়ে যেতে হয় তা সঞ্জয় দত্তের চেয়ে আরকে ভাল জানেন? ৬০ এর দশক থেকেই বলিউডে নারীদের পুরুষ কর্তাব্যক্তিরা সহজলভ্য ও ভোগ্যবস্তু হিসেবে দেখতেন। এখনও বলিউডের সেই চিত্র পাল্টায়নি। পর্দার সামনে যতই লিঙ্গসমতার কথা উচ্চারিত হোক না কেন, পর্দার বাইরে নারীদের নিয়ে যেসব গল্প-কথা চালু করা হয় তাতে এটা বলাই যায় যে বলিউডে নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি একদম পাল্টায়নি। খুব দাপুটে হিরোর সাথে কাজের সময়ই হিরো দেখা যায় নায়িকা নিয়ে উধাও। সেটে খুব ডাকাডাকি হলে হয়ত বলা হয়, হিরো নায়িকাকে চিত্রনাট্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এই তো চলে আসবেন মিনিট চল্লিশের মধ্যেই।
সঞ্জয় দত্ত ও তার মেয়ে ত্রিশালা দত্ত। ছবি: জি নিউজ নেটওয়ার্ক।
চিত্রবোদ্ধাদের অনেকে মনে করেন, সেটা সম্মতিতে হলে তারা যা খুশি করুন কিন্তু কেন অনেক বিখ্যাত অভিনেতা-অভিনেত্রী তাদের কন্যাদের চিত্র জগতে আসতে দিতে চান না? সঞ্জয় দত্তের বেলায় বলা যায় তার যে চলচিত্র জীবন দেখে তার কন্যারা বড় হয়েছেন তিনি স্বাভাবিক ভাবেই চাইবেন না যে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার পরিবারের কেউ এই পথে আসুক।
যাক সেইসব কথা ইতিমধ্যে মিডিয়াতে বেশ আলোচিত। বলিউডের চলচিত্র জগতের অন্দর মহলের খবর রাখেন এমন অনেক সাংবাদিক জানেন যে, চলচিত্র পরিবারের কাউকে সিনেমা জগতে আসার জন্য বড় যুদ্ধটা আসলে করতে হয় পরিবারের সাথে। এখানে মনে রাখতে পারেন শাহরুখের পুত্র-কন্যাদের সিনেমাতে জড়ানো নিয়ে খবর চাউর হলে তাঁর প্রতিক্রিয়াটা কি ছিল। শাহরুখের তরফে কোন উৎসাহব্যঞ্জক শব্দ শোনা যায় নি। যদিও মাঝে মাঝে মিডিয়াতে উড়ো খবর প্রচারিত হয়েছে কিন্তু সত্য হল, তাঁরা কেউ সিনেমা জগতে আসেননি এখনও।
নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর সাথে কন্যা শোরা সিদ্দিকী। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
চিত্রসমালোচক শুভাষ ঝা একটি মজার অভিজ্ঞতা বর্ণনার মধ্য দিয়ে এ বিষয়ে আলোচনার ইতি টেনেছেন। গ্যাং অব ওয়াসিপুরের মাধ্যমে যিনি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। অনুরাগ কাসাপের অমূল্য আবিস্কার নওয়াজুদ্দিন সিদ্দীকির সাম্প্রতকি একটা ঘটনা তিনি বলেছেন। নওয়াজ সেট থেকে ডিনারের জন্য বাসায় এসেছেন। এসেই খবর পেলেন তিনি ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জনক হয়েছেন। তিনি সদ্যজাত কন্যার ছবি তুলে চিত্রসমালোচক শুভাস ঝা’কে দেখালে শুভাসও খুশিতে বলে উঠেন, আপনার কন্যা একদিন অনেক বড় অভিনেত্রী হবে। এই শুভাসীয় বাণী শুনে নওয়াজের মুখটা কালো হয়ে যায়, তিনি মৃদু কন্ঠে শুধু বলেন, আমার কন্যার জন্য অন্য যে কোন আর্শীবাদ করেন শুধু বইলেন না যে তারও বলিউডের নায়িকাদের জন্য জীবন হবে। এটা আমি চাই না। আমার কন্যার বলিউডি জীবন আমি দেখতে চাই না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন