সারা বিশ্বে বেঁচে থাকা একমাত্র পুরুষ শ্বেত গণ্ডারটির মৃত্যুর পর এই প্রজাতিব প্রাণিটি ‘আনুষ্ঠানিকভাবে’ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন এই প্রাণিটিকে ফিরে পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো বিজ্ঞান। অর্থাৎ গবেষণাগারে আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে এই প্রাণিটিকে জন্মানো যেতে পারে।
বন্যপ্রাণি রক্ষায় কাজ করে এরকম একটি দাতব্য সংস্থা ডাব্লিউডাব্লিউএফ- এর প্রধান কলিন বাটফিল্ড বলছেন, “পরিস্থিতি আসলেই ভয়াবহ।”
খুব বেশি বিপদের মধ্যে আছে এরকম প্রাণিকুলের একটি ভাকুইয়তা। এটি ডলফিন বা ছোট আকারের একটি তিমি, যা ১৯৫৮ সালে প্রথম দেখা গিয়েছিলো। একই রকম বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় আছে আরো একটি গণ্ডার যার নাম জাভান।এছাড়াও আরো যেসব প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পথে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে সুমাত্রান গণ্ডার, কৃষ্ণ গণ্ডার, আমুর চিতাবাঘ, ফরেস্ট হাতি এবং বোর্নিও দ্বীপের ওরাংওটান। তার কোনো কোনোটির সংখ্যা হয়তো একশোরও কম বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রকৃতি সংরক্ষণে কাজ করে এরকম আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন এসব প্রাণির একটি তালিকা তৈরি করেছে। তার নাম দেয়া হয়েছে রেড লিস্ট। এই তালিকায় উদ্ভিদ, স্তন্যপায়ী প্রাণি, পাখি, জলে ও স্থলে বাস করতে পারে এরকম উভচর প্রাণি, সামুদ্রিক প্রাণি ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলোকে আবার কোনটা কতো বেশি ঝুঁকির মুখে সেই তুলনা করে তাদের একেকটা ভাগে ফেলা হয়েছে।
সংস্থাটি মনে করে, বর্তমানে পাঁচ হাজার পাঁচশ ৮৩টি প্রাণি ‘গুরুতর বিপদের’ মুখে।
এদের মধ্যে কমপক্ষে ২৬টি প্রাণিকে ২০১৭ সালে বিপন্ন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তার আগের বছরে এই প্রাণিগুলোর ভবিষ্যত এতোটা শোচনীয় ছিল না।
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে আই ইউ সি এনের হিসেবে তখনও পর্যন্ত বেঁচেছিল ৩০টির মতো ভাকুইয়তা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী এক দশকের মধ্যেই এই প্রাণিটি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
সংস্থাটি বলছে, এসব প্রাণির সংখ্যা কত সেটা একেবারে নির্ভুলভাবে বলা কঠিন। তারপরেও যাতে প্রকৃত সংখ্যার খুব কাছাকাছি যাওয়া যায় সেজন্যে এই গণনায় নানা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
স্থলে প্রাণিদের ক্ষেত্রে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণবাদীরা যেসব বিষয় বিবেচনা করেন:
জিপিএস ট্র্যাকার
হত্যার আলামত
পদচিহ্ন
গাছপালায় আঁচড়
বিষ্ঠা বা মল
এসব হিসেব করে তারা প্রাণিটির সংখ্যা গণনা করেন। কিন্তু এই গণনা সবসবময় বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকে না।
এছাড়াও প্রত্যেক বছর নতুন নতুন প্রজাতি চোখে পড়ছে। ফলে ঠিক কতো সংখ্যক প্রাণি আসলেই বিপন্ন হওয়ার পথে সেটা হিসেব করা একটু জটিল।
বিজ্ঞানীদের অনেকে বলেন যে কোনো কোনো প্রাণির অস্তিত্ব সম্পর্কে জানার আগেই সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
ব্রাজিলের স্পিক্স ম্যাকাও বিলুপ্ত বলে ধরে নেয়া হয়েছিল কিন্তু ২০১৬ সালে এরকম একটি পাখি দেখা গিয়েছিল।
তবে কোন প্রাণী কতোটা বিপন্ন সেটা বুঝতে গিয়ে শুধু তার সংখ্যাই বিবেচনা করা হয় না।
কীভাবে বুঝবো কোন প্রাণি কতোটা বিপন্ন?
যেসব বিষয় বিবেচনা করা হয়:
তারা কি শুধু একটি এলাকাতেই বাস করছে যে কারণে তাদের শুধুমাত্র হয়তো একটি কারণেই হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে, নাকি তারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে?
তাদের প্রজনন চক্র কতদিন ধরে স্থায়ী হয়? যথেষ্ট সংখ্যায় যদি প্রাণিটি না থাকে তাহলে কতো দ্রুত এটি আবার বংশবিস্তার করতে পারবে?
প্রাণিটি যেসব হুমকির সম্মুখীন সেগুলো কতোটা ব্যাপক?
প্রাণিটি জিনগতভাবে কতোটা বৈচিত্রপূর্ণ?
তাদের বসতি কতোটা হুমকির মুখে? বিবিসি।
নিউজবাংলাদেশ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন